আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আফগানিস্তান অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে পাকিস্তান। আর তাই বিপর্যয় এড়াতে জরুরি ভিত্তিতে আফগান ভূখণ্ডে তহবিল ও মানবিক সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি এই আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। আফগান ইস্যুতে এদিন পাকিস্তানের উদ্যোগে ইসলামাবাদে আয়োজিত এক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া এবং তালেবান কূটনীতিকরা মিলিত হলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোরেশি এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন।
অবশ্য বাইডেন প্রশাসনের নিযুক্ত আফগানিস্তান বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বিশেষ দূত টমাস ওয়েস্ট সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধিরা পরে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন।
ট্রোইকা প্লাস সভার উদ্বোধনী বক্তব্যে শাহ মেহমুদ কোরেশি বলেন, ‘আফগানিস্তান আজ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। তাই দেশটির জন্য জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা জোরদার করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য অপরিহার্য।’
তিনি বলেন, তহবিলের প্রবাহ পুনরায় শুরু করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত করার পাশাপাশি আফগান অর্থনীতিকে স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যদি মনে করেন, আপনি ইউরোপের মতো দূর দেশে নিরাপদে থাকবেন এবং ওই অঞ্চলগুলো সন্ত্রাসবাদ দ্বারা প্রভাবিত হবে না; ইতিহাস ভুলে যাবেন না, আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েছি এবং অতীতে করা ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি আমরা করতে চাই না।’
২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। আফগান সব সম্প্রদায় ও গোত্রের প্রতিনিধিত্বমূলক প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও প্রধান প্রধান মন্ত্রণালয়গুলোতে তালেবানের কট্টরপন্থী এবং অনুগতদেরই নিয়োগ দেওয়া হয়।
তবে তালেবান সরকার গঠন করলেও এখনও কোনো দেশই সেই সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থা আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়। ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক সংকট প্রতিদিনই খারাপের দিকে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ বারবার সতর্ক করেছে যে, বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে আফগানিস্তান। দেশটির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ তীব্র খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে এবং প্রচণ্ড শীতের মধ্যে লাখ লাখ আফগান অনাহারের মধ্যে থাকতে বাধ্য হচ্ছে।