প্রযুক্তি ডেস্ক:
অবশেষে বাজারে এলো আইফোন ১৩। বুধবার ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাপল পার্কে আইফোন ১৩ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান ছিল। বরাবরের মত এবারের সিরিজেও থাকছে চারটি মডেল। আইফোন ১৩, আইফোন ১৩ মিনি, আইফোন ১৩ প্রো ও আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স। এরমধ্যে আইফোন ১৩ ও আইফোন ১৩ মিনিতে পাওয়া যাবে সুপার রেটিনা এক্সডিএ ডিসপ্লে, আইপি ৬৪ রেটিং, এ১৪ বায়নিক প্রসেসর, ১২ মেগাপিক্সেল ডুয়েল রিয়ার ক্যামেরা ও আইওএস ১৫ অপারেটিং সিস্টেম। তাহলে চলুন জেনে নিই ফোন গুলোর স্পেসিফিকেশন ও ফিচার সম্পর্কে…
ডিসপ্লেতে নতুন কী আছে
আইফোন বরাবরের মত এবারও ডিসপ্লেতে আকর্ষণ রেখেছে। সেটা ফুটে ওঠেছে আইফোন ১৩ ও আইফোন ১৩ মিনিতে। ৬.১ ইঞ্চি ও ৫.৪ ইঞ্চি সুপার রেটিনা এক্সডিআর ডিসপ্লে রয়েছে আইফোন ১৩ ও আইফোন ১৩ মিনির। ডিসপ্লেতে ওলেড প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে। বেস মডেলের ডিসপ্লের পিক্সেল ডেনসিটি ৪৬০ পিপিআই এবং রেজোলিউশন ২৫৩২ x ১১৭০ পিক্সেল। মিনি মডেলের ডিসপ্লের পিক্সেল ডেনসিটি ৪৭৬ পিপিআই এবং রেজোলিউশন ফুল-এইচডি প্লাস (১০৮০x২৩৪০পিক্সেল)।
উভয় ফোনের ডিসপ্লে হ্যাপটিক টাচ ও এইচডিআর সাপোর্ট করবে। এতে ওলিওফোবিক কোটিং রয়েছে। যার ফলে স্ক্রিনে আঙুলের দাগ পড়বে না। অন্যদিকে আইপি ৬৪রেটিং থাকায় পানি থেকেও রক্ষা করবে আইফোন ১৩ ও আইফোন ১৩ মিনি-কে। ৩০ মিনিট ধরে ৬ মিটার জলের গভীরতায় রাখলেও আইফোনের এই দুটি মডেল ঠিকমতো কাজ করবে।
কনফিগারেশনে যা আছে
অ্যাপলের অত্যাধুনিক এ১৫ বায়োনিক প্রসেসর সংযুক্ত করা হয়েছে আইফোন ১৩ ও আইফোন ১৩ মিনিতে। হেক্সা কোরের এই প্রসেসরে পারফরম্যান্স কোর দু’টো এবং বাকি চারটি এফিসিয়েন্সি কোর। একইসঙ্গে রয়েছে কোয়াড কোরের নতুন জিপিইউ ও নিউরাল ইঞ্জিন ১৬ কোরের। ১২৮ জিবি / ২৫৬ জিবি / ৫১২ জিবি স্টোরেজ কনফিগারেশনে আইফোনের এই মডেল দুটি এসেছে। যদিও ফোন দুটিতে কত জিবি র্যাম রয়েছে তা এখনও অজানা।
ফোন দুটির ব্যাটারি ক্যাপাসিটি অ্যাপল জানায়নি। তবে আইফোন ১৩ একটানা ১৯ ঘণ্টা পর্যন্ত ভিডিও প্লেব্যাক এবং ৫৭ ঘণ্টা পর্যন্ত অডিও প্লেব্যাক টাইম দেবে বলে অ্যাপেল জানিয়েছে।
অন্যদিকে আইফোন ১৩ মিনি-তে সতেরো ঘণ্টা ধরে একটানা ভিডিও দেখা যাবে। অডিও প্লে ব্যাক টাইম ৫৫ ঘণ্টা। ২০ ওয়াট বা তার বেশি পাওয়ারের অ্যাডাপ্টার দিয়ে ৩০ মিনিটের মধ্যে ফোন দুটির ব্যাটারি ৫০ শতাংশ চার্জ করা যাবে। আবার ১৫ ওয়াট পর্যন্ত ম্যাগসেফ ওয়্যারলেস চার্জিং সাপোর্ট করবে। বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম, আইওএস ১৫তো থাকছেই আইফোন ১৩ ও আইফোন ১৩ মিনিতে।
নতুন ফোনের ক্যামেরা কেমন?
আইফোনের ক্যামেরার সুনাম সর্বত্র। আর নতুন আইফোন ১৩ ও আইফোন ১৩ মিনি ফটোগ্রাফি পারফরম্যান্সকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ১২ মেগাপিক্সেলের ডুয়েল ক্যামেরা সেটআপের সঙ্গে থাকছে সেন্সর শিফট অপটিক্যাল ইমেজ স্টেবিলাইজেশন প্রযুক্তি। পাশাপাশি থাকছে একটি এফ/১.৬ অ্যাপারচারের ওয়াইড ও এফ/২.৪ অ্যাপারচার ও ১২০॰ এফওভি-সহ একটি আল্ট্রাওয়াইড লেন্স। এই দু’টি ক্যামেরাই যে কোনও ফ্ল্যাগশিপ অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের গায়ে কাঁপুনি ধরিয়ে দেবে।
অ্যাডভান্সড বোকেহ এবং ডেপ্থ কন্ট্রোলের সঙ্গে পোট্রেট মোড আইফোন ১৩ ও আইফোন ১৩ মিনির ক্যামেরা ফিচারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও এতে ন্যাচারাল, স্টুডিও, স্টেজ, হাই-কী মনো-সহ ছ’টি এফেক্টের পোট্রেট লাইটিং, স্মার্ট এইচডিআর ৪, নাইট মোড, ডিপ ফিউশন, অ্যাডভান্সড রেড আই কারেকশন, অটো ইমেজ স্টেবিলাইজেশন, বার্স্ট মোড, এবং ফোটো জিওট্যাগিংয়ের সুবিধা পাওয়া যাবে।
আইফোন ১৩ ও আইফোন ১৩ মিনির ক্যামেরা দিয়ে ২৪ এফপিএস, ২৫ এফপিএস, ৩০ এফপিএস, বা ৬০ এফপিএস পর্যন্ত ৪কে ভিডিও শুট করা যাবে। রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে ডলবি ভিশন ও এইচডিআর-এর সুবিধা। আবার সিনেমাটিক মোডে ৩০ এফপিএসে ফুল-এইচডি ভিডিও রেকর্ড করা যাবে। অডিও জুম, কুইকটেক ভিডিও, স্লো-মোশন ভিডিও সাপোর্ট, স্টাবিলাইলাইজেশন সহ টাইম-ল্যাপস, নাইড মোড টাইম-ল্যাপস, সিনেমাটিক ভিডিও স্টেবিলাইজেশন, স্টিরিও রেকর্ডিং – আইফোন ১৩ ও আইফোন ১৩ মিনি-র ভিডিও রেকর্ডিং উল্লেখযোগ্য।
সেলফি ও ভিডিও কলের জন্য আইফোন দুটির সামনে এফ/২.২ অ্যাপারচারের ১২ মেগাপিক্সেল ট্রুডেপ্থ ক্যামেরা রয়েছে। সেলফি ক্যামেরাতে অ্যাডভান্সড বোকেহ ও ডেপ্থ কন্ট্রোলের সঙ্গে পোট্রেট মোড, অ্যানিমোজি ও মিমোজি, ডিপ ফিউশন ফিচার পাওয়া যাবে। এছাড়া সিনেমাটিক ভিডিও রেকর্ডিং এবং টাইম-ল্যাপসে ভিডিও শ্যুট করা যাবে।
বিএসডি/আইপি