জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
আমার গানে একজন সিরিয়াল কিলার মডেল হয়েছে এটা ভাবতেই এখন আমার কষ্ট পাচ্ছি- বলছিলেন ভাঙা তরী ছেঁড়া পালের গায়ক কিশোর পলাশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রিয় ফোক সঙ্গীতশিল্পী বলেন, ‘একজন সিরিয়াল কিলার ধরা পড়লো, শুনলাম আমার গানের ভিডিও থেকেই নাকি ধরা পড়েছে। আর যাই বলেন, বিষয়টা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে যে আমার মিউজিক ভিডিও এমন একজন খারাপ মানুষ রয়েছে।’
উত্তরবঙ্গের বগুড়া শহরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিজের অবস্থান জানান দিতে তিন জনকে হত্যা করে হেলাল হোসেন ওরফে সেলিম ফকির ওরফে বাউল সেলিম ওরফে খুনি হেলাল (৪৫)। ওই হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলা থেকে নিজেকে আড়াল করতে গত ২০ বছর ধরে বাউল ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর ভৈরব স্টেশনে গান গেয়ে নতুন করে জীবন শুরু করে এবং দ্বিতীয় বিয়ে করে। মূলত হত্যাকাণ্ডের সাজা থেকে বাঁচতেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ঘুরতেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রেহাই হয়নি। ২০ বছর লুকিয়েও রেহাইল হলো না, কেননা এই মিউজিক ভিডিও এখন পর্যন্ত সাড়ে ৫ কোটিবার দেখা হয়েছে।
মিউজিক ভিডিওতে সিরিয়াল কিলার কেন?
এ বিষয়টি সবিস্তারে বলেছেন কণ্ঠশিল্পী কিশোর পলাশ। জনপ্রিয় ধারার এই ফোক শিল্পী বলেন, ‘ভাঙা তরী ছেঁড়া পাল গানের মিউজিক ভিডিও করার জন্য আমরা ঢাকার আশেপাশের লোকেশন বেছে নেই। এই মিউজিক ভিডিওর ডিরেক্টর নোমান রবিন ভাই। মূলত আমাদের কোনো মডেল ছিল না। আমরা রাস্তার পাশে যাকে পাচ্ছি আমাদের গল্পের সঙ্গে মিলে গেলে তাকে অফার করছি। দেখবেন, আমাদের গানে একজন মুচি, রাস্তার মানুষ ও অই বাউলশিল্পী মানে যিনি সিরিয়াল কিলার, আসলে উনি যে সিরিয়াল কিলার; সর্বোপরি লোকটি যে একজন খারাপ মানুষ সেটা কোনোভাবেই বোঝা আমাদের সম্ভব ছিল না।
কিশোর পলাশ বলেন, আমরা ওইদিন নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশনের আশেপাশে শুটিং করছিলাম। হঠাৎ বাউল সেলিমকে দেখতে পাই রেললাইন দিয়ে কোথায় যেন হেঁটে যাচ্ছে। মনে হলো লোকটাকে মিউজিক ভিডিওতে সামান্য সময়ের জন্য ধরতে পারলে ভালো হতো। যে ফোক, কিছুটা আধ্যাত্মিক ধরনের গান। উনাকে বললাম, সে এক কথায় রাজি হয়ে গেল। আমরা শুটিং করলাম। এই শুটিং ঘটনা ৫ বছর আগে, আর এই মুহূর্তে এসে জানলাম লোকটা সিরিয়াল কিলার। আমার এমন একটা ভাইরাল গানে খুনি, ভাবলেই কষ্ট হচ্ছে।
কিশোর পলাশ একদিক থেকে কিছুটা সন্তোষ প্রকাশও করলেন। বললেন, শুনেছি আমার ভিডিওর সূত্র দিয়ে এই সিরিয়াল কিলারকে ধরা হয়েছে। এটা অবশ্য একদিক থেকে কল্যাণকর কাজ বটে। একজন অপরাধী ধরা পড়লো। ষোল কোটি মানুষের দেশে একটা ভিডিও যদি সাড়ে ৪ কোটি মানুষ দেখে, তাহলে নিশ্চই কিছু মানুষের চোখ অবশ্যই ফাঁকি দেওয়া সম্ভব না।
বিএসডি/এসএ