হাসপাতালে ওষুধ নেই, মর্গে আলো নেই। চিকিৎসার অভাবে রোগীদের মৃত্যু হচ্ছে গাজার আল-শিফা হাসপাতালে।
গাজার আল-শিফা হাসপাতালের অবস্থা ভয়াবহ। স্থানীয় সময় সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, হাসপাতালটি একটি কবরখানায় পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের বাইরে ও ভেতরে মরদেহ ছড়িয়ে আছে। মর্গ থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। রেফ্রিজারেটর কাজ করছে না।
অসংখ্য প্রিম্যাচিওর শিশুকে ইনকিউবেটর থেকে বার করে নিতে হয়েছে। কারণ হাসপাতালে আলো থাকছে না। ইনকিউবেটর কাজ করছে না। অন্তত ৪৫ জন রোগীর ডায়েলাইসিস প্রয়োজন। বিদ্যুতের অভাবে ডায়েলেসিসের যন্ত্র চালানো যাচ্ছে না। হাসপাতালে অ্যানেস্থেশিয়ার ওষুধ নেই, রক্ত নেই। অথচ রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। সব মিলিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
হাসপাতাল চত্বরে যুদ্ধ ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। ইসরায়েলের দাবি, হাসপাতালের নিচে বাংকার বানিয়ে রেখেছে হামাস। সেখান থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করছে তারা। যুদ্ধ বিমান থেকে এলাকায় বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে হাসপাতালে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর দাবি, গাজার অনেকটাই এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু হামাসের হাই কমান্ড এখনও হাসপাতালের নিচে বাংকারে লুকিয়ে আছে। সেখান থেকেই তারা যুদ্ধ পরিচালনা করছে। ফলে ওই বাংকার ধ্বংস করা জরুরি। অবশ্য এ কথা স্বীকার করেনি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সোমবারও জানিয়েছে, অন্তত ১১ হাজার ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে ইসরায়েলের আক্রমণে। এর মধ্যে সাড়ে চার হাজার শিশু বলে তাদের দাবি।
সোমবার ডব্লিউএইচও মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান জানান, আল-শিফা হাসপাতালে এখনও অন্তত ৬০০ জন রোগী আছেন। হলে যাওয়ার রাস্তায় বহু রোগী আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের চারদিকে ছিন্নভিন্ন দেহ ছড়িয়ে আছে। দেহগুলি তুলে আনা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, সেখানে লড়াই চলছে। ক্রমাগত গুলি চলছে। দেহগুলো থেকে পঁচা গন্ধ ছড়াচ্ছে।’
হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও জানিয়েছেন, ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। চিকিৎসা করা কার্যত সম্ভব হচ্ছে না, কারণ, চিকিৎসা করার সরঞ্জাম নেই। চিকিৎসক মহম্মদ আবু সেলমিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ এখনও তাদের সাপ্লাই বন্ধ করে রেখেছেন। ফলে মরদেহ পঁচে যাচ্ছে হাসপাতালের ভেতরেও। হাসপাতালের ভেতর কুকুর ঢুকে পড়ছে। তারা মরদেহ খাওয়ার চেষ্টা করছে।
সব মিলিয়ে গোটা হাসপাতাল চত্বর জুড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
বিএসডি/ এফ এ