আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউক্রেন ইস্যুতে বৈঠকে বসতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) ভার্চ্যুয়ালি এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মূলত ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনাবাহিনীর জড়ো হওয়া এবং আক্রমণের আশঙ্কার মধ্যেই পুতিনের মুখোমুখি বসতে চলেছেন বাইডেন।
যদিও ইউক্রেন ইস্যুতে এই বৈঠকের আয়োজন করা হলেও বৈশ্বিক পরাশক্তির এই দুই দেশের নেতার মধ্যে সমঝোতার সম্ভাবনা বা যেকোনো ধরনের আপসের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। মঙ্গলবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে গত শনিবার উভয় দেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। অবশ্য মঙ্গলবার ঠিক কখন পুতিন ও বাইডেনের মধ্যে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে, তা জানানো হয়নি।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার গ্রিনিচ মান সময় বিকেল ৩টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়) ভিডিওকলের মাধ্যমে এই বৈঠক শুরু হতে পারে। ইউক্রেন ইস্যু ছাড়াও কৌশলগত স্থিতিশীলতা, সাইবার নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়ও বৈঠকের আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠতে পারে।
ভার্চ্যুয়াল এই বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার সম্পর্ক কোন পর্যায়ে রয়েছে; এমন প্রশ্নের জবাবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারি বাসভবন ক্রেমলিন জানিয়েছে, ‘(উভয় দেশের সম্পর্ক) খুবই দুঃখজনক পর্যায়ে রয়েছে।’
ওয়াশিংটন বরাবরই অভিযোগ করে আসছে যে, ন্যাটোর সদস্য দেশ ইউক্রেনের সীমান্তে বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করে রেখেছে রাশিয়া। দেশটির আশঙ্কা, ২০১৪ সালে রাশিয়া যেভাবে ক্রিমিয়া দখল করে নিয়েছিল এবারও ঠিক একইভাবে ইউক্রেনে হামলা করা হতে পারে এবং সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট করতে পারে।
ওয়াশিংটন বলছে, রাশিয়া এমন কিছু করলে পশ্চিমারা দেশটির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রস্তুত। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ক্রেমলিন। মস্কোর দাবি, রুশ সেনারা নিজস্ব ভূখণ্ডেই অবস্থান করছে এবং সেখানে তারা আত্মরক্ষামূলক কর্মকাণ্ডই পরিচালনা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা দাবি করেছেন রুশ সামরিক বাহিনী ২০২২ সালের শুরুর দিকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান পরিচালনা করতে পারে। গত শুক্রবার গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট ও বার্তাসংস্থা এপি।
ওয়াশিংটন পোস্টের হাতে আসা গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, চারটি স্থানে রাশিয়ার সেনা, ট্যাংক ও কামানের সমাবেশ ঘটানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বর্তমানে ইউক্রেন সীমান্তে ৯৪ হাজার সেনা রয়েছে, যা এক লাখ ৭৫ হাজারে উন্নীত হতে পারে। এছাড়া আগামী মাসেই হামলার আশঙ্কা করা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউক্রেনও।
এরপরই ইউক্রেন ইস্যুতে মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও প্রেসিডেন্ট পুতিন বৈঠকে বসবেন বলে ঠিক হয়। সেই বৈঠকে ঠিক কতটা ফল বয়ে আনবে বা ইউক্রেন ইস্যুতে উত্তেজনা কতটা প্রশমিত করতে পারবে সেটিই এখন দেখার বিষয়। তবে আর যাই হোক, কোনো সমঝোতা বা যেকোনো ধরনের আপসের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
বিএসডি/ এসএ