বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক:
ভালো মানের একটি স্মার্টফোন এখন আমাদের নিত্যদিনের অপরিহার্য অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে। সারাদিনের প্রয়োজনীয় কাজ, বিনোদন কিংবা গেমিং এর অভিজ্ঞতা পেতে গ্রাহকদের মাঝে স্মার্ট ডিভাইসের এমন চাহিদা আগে কখনো দেখা যায়নি। প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় ই-কমার্স, ‘মোবাইল অফিস’ ও ভারি এপ্লিকেশনের ব্যবহার বাড়তে থাকায় ক্রেতারা কোন মোবাইল ডিভাইসটি কিনবেন এ নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় থাকে। তাই স্মার্টফোনপ্রেমিদের তাদের প্রাত্যহিক সব কাজে স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির বৈচিত্র্যময় মোবাইল ডিভাইস বাজারে এনেছে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স।
অ্যাপ অ্যানি এর মতে, সারাবিশ্বেই নতুন অ্যাপ এবং গেমস এর চাহিদা বাৎসরিক হিসাবে সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ হারে দ্রুত বেড়ে ২১ হাজার ৮ শ কোটি ডাউনলোড এ দাঁড়িয়েছে। এছাড়া, ডিজিটাল ডিভাইস সমূহের মধ্যে বছরে ৩ লাখ ৫০ হাজার কোটি ঘণ্টা ব্যবহার হিসাব অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলোর দখলে। মোট ব্যবহারকারী সংখ্যা ও পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষায় তাই এটি প্ল্যাটফর্ম অদ্বিতীয়!
স্মার্টফোনে র্যাম এর গুরুত্ব:
মোবাইল কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের কাছে র্যাম (র্যাপিড অ্যাক্সেস মেমোরি) এর ফিচার বেশ গুরুত্ব পেয়ে থাকে। ব্যবহারকারীরা জানেন বাধা-বিঘ্ন ছাড়া স্মার্টফোনে দ্রুত কাজ করতে ডিভাইসে প্রচুর র্যাম প্রয়োজন। মোবাইল ফোনে দুই ধরনের মেমোরি থাকে, একটি র্যাম এবং অন্যটি রম। যদি আমরা কম্পিউটারের কথা ভাবি তাহলে দেখা যাবে এটির পারফরম্যান্সে মেমোরি ও হার্ড ডিস্ক বেশ প্রভাব রাখে। যেখানে ‘প্রোগ্রাম’ রান করা, তথ্য আদান-প্রদানের কাজ- ইত্যাদি করে থাকে মেমোরি। অপরদিকে হার্ড ডিস্কে ছবি, ভিডিও বা অন্যান্য ফরম্যাটের ফাইল জমা করা যায়। অপরদিকে মোবাইল ফোনের সব প্রোগ্রাম ‘রান’ অর্থ্যাৎ ডিভাইসে প্রোগ্রামের কার্যক্রম সম্পন্ন করে র্যাম । তাই স্মার্টফোনের পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে র্যামের ‘রিড ও রাইট’ স্পিড এবং সক্ষমতা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
অসংখ্য মোবাইল ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন, স্মার্টফোনে গেমিং এর সময়ে তারা যদি কোনো ‘সোস্যাল অ্যাপ’ এ প্রবেশ করতে চান অথবা কারো মেসেজ এর রিপ্লাই দিতে চেষ্টা করেন, তখন ডিভাইসের পারফরম্যান্সে সমস্যা দেখা দেয়, গেমটি ‘স্লো’ হয়ে যায় বা নতুন করো লোড করতে হয়। ‘ইনসাফিসিয়েন্ট মেমোরি’ বা ‘অপর্যাপ্ত মেমোরির’ অভাবে এই ‘কিল অ্যাপ’র বিষয়টি ঘটে থাকে। তবে মোবাইল ফোনের ‘রানিং মেমোরি’ বেশি হলে ব্যবহারকারীরা একইসঙ্গে অনেকগুলো অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন এবং কোনো রকম ‘ল্যাগ’ বা ‘বিঘ্ন’ ছাড়াই একটি অ্যাপ থেকে অন্য একটি অ্যাপে ‘মুভ’ করতে পারেন। যেসব গ্রাহক ভারী ভারী অ্যাপ ব্যবহার করেন ও বিশেষ করে গেমারদের জন্য এ বিষয়টি আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ ডিভাইসের র্যাম যত বেশি হবে তাতে তত ‘স্মুথভাবে’ গেমিং অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে। তবে সমস্যা হলো মোবাইলের র্যাম বেশি হলে সেইসঙ্গে ডিভাইসের দামও বৃদ্ধি পায়। তাই ক্রেতারা অনেক সময় বাজেট স্বল্পতার কারণে তাদের পছন্দের বেশি র্যাম এর ডিভাইসটি কিনতে গিয়ে দ্বিধায় ভোগেন।
ইনফিনিক্সের বর্ধিত র্যামের অভাবনীয় অভিজ্ঞতা:
র্যাম -জনিত সব সমস্যার সমাধানে ইনফিনিক্সের সর্বশেষ স্মার্টফোন ‘নোট ১১ প্রো’তে রয়েছে একেবারেই নতুন ফিচার ‘এক্সটেন্ডেট র্যাম টেকনোলজি’। এর ফলে এক ক্লিকেই ডিভাইসের র্যাম ৮জিবি থেকে ১১জিবি অর্থ্যাৎ ৩জিবি বেড়ে যায়। ব্যবহারকারীরা যখন নির্দিষ্ট সময়ে অনেক অ্যাপ করতে চান, তখন ‘ব্যাটারি লাইফ’ এর অবনমন না ঘটিয়েই ডিভাইসের ‘সাময়িক বুস্ট’ প্রয়োজন হয়। বর্ধিত র্যাম টেকনোলজি মানেই যখন ডিভাইসের ‘র্যাম’ পর্যাপ্ত নয় তখন ধারাবাহিক পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে ‘রম’ই র্যাম এর ভূমিকায় কাজ করে থাকে। গ্রাহকরা ‘নোট ১১ প্রো’ এর ‘স্টোরেজ’- ‘মেমফিউশন’ এর নিচে সেটিংস অপশনে গিয়ে সহজেই এই ফিচারটি ব্যবহার করতে পারবেন।
বর্ধিত র্যাম টেকনোলজির মাধ্যমে ইনফিনিক্সি নোট ১১ প্রো স্মার্টফোনে একইসঙ্গে অ্যাপ ব্যবহারের সংখ্যা ৯ থেকে বাড়িয়ে করা যাবে ২০টি। এই ২০টি অ্যাপের স্টার্ট আপ স্পিড গড়ে ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে হবে প্রায় ৩০০এমএস। এছাড়া, নতুন এই ফিচারের ফলে স্মার্টফোনে গেমস আরো দ্রুত লোড করা যায় এবং এক অ্যাপ থেকে অন্য অ্যাপ ব্যবহার এবং গেমিং এ পুনরায় ফিরে আসায় কোনো সমস্যা দেখা দেয় না।
গ্রাহকদের সর্বোচ্চ প্রত্যাশা মেটাতে বর্ধিত র্যাম টেকনোলজিতে আরো বেশ কিছু উদ্ভাবনী প্রযুক্তি যোগ করেছে ইনফিনিক্স। এটিতে রয়েছে ‘ডুয়েল সোয়াপ পার্টিশন টেকনোলজি’ এবং ‘হট অ্যান্ড কোল্ড পেজেস আইডেন্টিফিকেশন অ্যালগরিদম’। যেটি ডিভাইসের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণে রাখে এবং তাদের আলাদা আলাদা ‘সোয়াপ পার্টিশনে’ চালিত করে। সাধারণ ‘মেমোরি ফিউশন সল্যুশনস’ এর তুলনায় এই প্রযুক্তি ‘রিড ব্যাক রেট’ কমিয়ে আনে এবং সাধারণ ব্যবহৃত অ্যাপগুলোর রেসপন্স আরো বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া ইনফিনিক্স এআই প্রিডিকশন অ্যালগরিদমের সমন্বয় ঘটিয়ে থাকে। এটি ধারণা দেয় কোন ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ কখন ব্যবহার হবে না এবং সেগুলোকে ‘এক্সটেন্ডেট মেমোরি অ্যাপ’ এ সেভ করে, যা অ্যাপের ‘হট লঞ্চ’ এর ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী।
ইনফিনিক্স নোট ১১ প্রো’তে আরো রয়েছে উন্নত ইউএফএস ২.২ ফ্ল্যাশ মেমোরি। যেটি ‘রাইট বুস্টার টেকনোলজি’ ব্যবহার করে এবং স্টোরেজ স্পিড বাড়ায় সাধারণ ইউএফএস ২.১ এর চেয়ে বেশি। এছাড়া, এই ফিচারে আরো রয়েছে ‘রেন্ডম রাইট স্পিড এর মধ্যে ৮ শতাংশ বৃদ্ধি’, ‘রেন্ডম রিড স্পিড এ ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি’ এবং ‘সিকোয়েন্টাল রাইট স্পিডে ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি’র উপায়।
গত এক দশকে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ফিজিক্যাল মেমোরি ১জিবি থেকে বেড়ে হয়েছে ৮জিবি। এছাড়া, কিছু ফ্ল্যাগশিপ ফোনে ১০জিবি বা তার চেয়ে বেশি র্যাম রয়েছে। ইনফিনিক্স তার বর্ধিত ফিজিক্যাল মেমোরির ভিত্তিতে বর্ধিত র্যাম টেকনোলজিকে কাজে লাগাচ্ছে। এতে ব্যবহারকারীরা উন্নত প্রযুক্তির বদৌলতে সাশ্রয়ী মূল্যের ডিভাইসে সাবলীলভাবে অনেক অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে পারছেন।
ইনফিনিক্স বিশ্বাস করে, পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তি এখন আর আমাদের সাধ্যের বাইরে নয়। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা তাদের নিত্যদিনের প্রযুক্তি ডিভাইস ব্যবহারে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন, সাশ্রয়ী মূল্যে সেসবের সুরাহা দিতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইনফিনিক্স।
বিএসডি/জেজে