নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী ইলা মিত্রের নামে নির্মিত পাঠাগার ও সংস্কৃতি কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে নাচোলের নেজামপুর রেল বাজারে পাঠাগারটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এখন সেটি টাকার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
পাঠাগারের ঘরটি নির্মিত হয়েছে একটি বট গাছের নিচে। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় দরজায় লাগানো তালাতেও জং ধরেছে। পাঠাগারটির প্রবেশপথ আগাছায় ভরে গেছে।
পাঠাগারটির দরজা খুলতেই দেখা গেলো বই আর চেয়ার টেবিলে পড়েছে ধুলা-বালির আস্তরণ। দেখে মনে হলো, দীর্ঘদিন সেখানে কারও পা পড়েনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে পাঠাগারটি বন্ধ। এ পাঠাগার থেকে বই নিয়ে পড়াশোনা করেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা। স্থানীয় বাসিন্দারাও পড়াশোনা করতে আসতেন এখানে।
সাংবাদিক সাজিদ তৌহিদ বলেন, ‘প্রশাসনের দেওয়া আর্থিক সহায়তায় পাঠাগারটি পরিচালিত হয়। কিন্তু চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে আর্থিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাঠাগারের কার্যক্রম এখন বন্ধ। এছাড়া অনেক বই এখনো পাঠকদের কাছে আছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নাচোলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বেশির ভাগ লোকজনই গরিব। অভাব–অনটনের কারণে অনেক শিক্ষার্থীর পড়ালেখা হয়না। ফলে স্কুল-কলেজ থেকে ঝরে পড়ে।এসব শিক্ষার্থীকে সহায়তার জন্য পাঠাগারে পাঠ্যবই রাখা আছে। বই নিয়ে পড়ে পরীক্ষা শেষে ফেরত দিয়ে যেতেন তারা। পাঠাগার বন্ধ থাকায় এখন সে সুযোগ মিলছে না তাদের।’
নাচোলন উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শরিফ আহম্মেদ জানান, ‘এ বিষয়ে আমি তেমন কিছুই জানিনা।’
পাঠাগার পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিধান সিং বলেন, ‘এই পাঠাগারে সব রকমের বই আছে। এখান থেকে বই নিয়ে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীরা নিয়ে পড়ালেখা করে। ফলে তাদের বই কেনার জন্য ভোগান্তি হয়না। এর আগেও দুইবার তহবিল বন্ধের কারণে পাঠাগারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সঠিক সময়ে টাকা না পাওয়ায় পাঠাগারে লোক রাখতে পারিনা ।’
পাঠাগারের সংকটের কথা বলতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘ঘরটির সামনে একটা গর্ত আছে। ফলে জায়গটিতে পানি জমে থাকে। পাঠাগারে টয়লেট থাকলেও পানির ব্যবস্থা নেই। গরমের সময় লোকজন আসে, কিন্তু ফ্যানের (বৈদ্যুতিক পাখা) ব্যবস্থা নেই। ফলে পাঠাগারটি চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না।’
বিএসডি/এসএইচ