নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে ৭ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার ১০ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সকালে এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ওই বৈঠকে এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেন তিনি। এর আগে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন একনেক সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভায় মোট ১০টি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উপস্থাপিত হয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৯৮৫ কোটি ৮ লাখ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
এবারের সভায় অনুমোদন পাওয়া ১০ প্রকল্পের মধ্যে ‘জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলি ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ সেতু প্রতিস্থাপন প্রকল্প (রংপুর জোন)’ রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৬১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এ প্রকল্পটি অনুমোদনের পর বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর। এছাড়া ‘বাগেরহাট-রামপাল-মংলা জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। একনেকে অনুমোদনের পর প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।
এ দিকে, ‘গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ৫জি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন’ প্রকল্পটির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রকল্পটি অনুমোদনের পর চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বরে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড। পাশাপাশি ‘দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের অডিয়ো ভিজুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। প্রকল্পটি জুলাই ২০২০ সাল থেকে জুন ২০২৩ সালে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ।
অন্যদিকে, ‘চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট-ব্রিজিং (অতিরিক্ত অর্থায়ন, এলজিইডি অংশ)’ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। অনুমোদনের পর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। আর ‘ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯০ কোটি টাকা। মঙ্গলবার একনেকে অনুমোদনের পর প্রকল্পটি চলতি বছরের এপ্রিল থেকে মার্চ ২০২৬ সালে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।
এছাড়া পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ‘পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প- তৃতীয় পর্যায়’ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। অনুমোদনের পর চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২৬ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি)। একই ভাবে ‘কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন’ প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হবে ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)।
অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পটি প্রথম সংশোধনের মাধ্যমে ব্যয় বেড়ে হচ্ছে ১৫৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৯৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি সংশোধন হলে দুই বছর মেয়াদ বেড়ে হবে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত। এছাড়া ‘শেখ হাসিনা সোলার পার্ক, জামালপুরে মাদারগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। অনুমোদনের পর প্রকল্পটি চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ সালে বাস্তবায়ন করবে রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল)।
বিএসডি/এমএম