নিজস্ব প্রতিনিধি:
চলতি বছরের এসএসসি-সমমান পরীক্ষায় কড়া নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা হবে। পরীক্ষার দিন কেন্দ্রের ২০০ গজ পর্যন্ত অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে। প্রশ্নফাঁস রোধে সারাদেশে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপারে মোড়ানো প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এসএসসি-সমমান পরীক্ষার প্রস্তুতি সংক্রান্ত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভা সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এসএসসি-সমমান পরীক্ষা। পরীক্ষার প্রস্তুতি, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি কীভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, সে বিষয়ে সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন সভাপত্বি করেন।
সভায় এসএসসি পরীক্ষা শুরু করতে শিক্ষা বোর্ডগুলোর প্রস্তুতি কী পর্যায়ে তা জানতে চাওয়া হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে কীভাবে কঠোর নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে সেসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে ফয়েল পেপারে মোড়ানো প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকরা যাতে ভিড় না করে সে জন্য কেন্দ্র সচিবের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সর্তক করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম আমিরুল ইসলাম বলেন, এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি কী পর্যায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। প্রশ্নপত্র সরকারি ট্রেজারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা বোর্ডের অধীনে ১৩টি জেলার মধ্যে ৮টিতে ওএমআর সিট, উত্তরপত্র ও অতিরিক্ত উত্তরপত্র পাঠানো হয়েছে। বাকি ৫ জেলায় আগামী সপ্তাহের মধ্যে পাঠানো হবে। সেসব বিষয় মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে কড়া নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে সেসব নির্দেশনা অনুসরণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
বৈঠকে উপস্থিত নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রে অনৈতিক কাজ ও প্রশ্নফাঁস রোধে কড়া নিরাপত্তা নিশ্চিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর দিন সকালে ফয়েল পেপারে মোড়ানো প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে। একাধিক প্রশ্ন সেট থাকবে লটারি করে পরীক্ষার দিন নির্বাচন করা হবে।
তিনি বলেন, কোথাও স্বাস্থ্যবিধির গাইড লাইন অমান্য করা যাবে না, বিষয়টি নিশ্চিত করতে পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিবকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। গেটের বাইরে যাতে কেউ ভিড় না করে সে জন্য কেন্দ্রের ভেতর থেকে মাইকিং করে সর্তক করা করতে বলা হবে।
অন্যদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা সব বিষয়ে না নিয়ে কেবল গ্রুপভিত্তিক নৈর্বাচনিক তিন বিষয়ে নেওয়া হবে। পরীক্ষা হবে ৫০ নম্বরের। তিন ঘণ্টার পরীক্ষা হবে দেড় ঘণ্টায়। উত্তরপত্রে ১০০ নম্বরের ওপর মূল্যায়ণ করা হবে। করোনার কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকক্ষে নিজ আসনে বসতে হবে।
এবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এমসিকিউ এবং সিকিউ অংশের পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনী ওএমআর সিট বিতরণ, সকাল ১০টায় বহুনির্বাচিনী প্রশ্নপত্র বিতরণ, সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বহুনির্বাচনী উত্তরপত্র ওএমআর শিট সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে।
দুপুর ২টা থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষার ক্ষেত্রে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনী ওএমআর সিট বিতরণ করা হবে। দুপুর ২টায় বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র বিতরণ, দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে বহুনির্বাচনী (ওএমআর শিট) উত্তরপত্র সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে।
পরীক্ষাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিচার ফোন (স্মার্ট ফোন ছাড়া) ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া পরীক্ষার হলে অন্য কেউ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।
বিএসডি / আইকে