আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
করোনভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রনকে ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)। বিভিন্ন সংস্থা নতুন এই রূপটির সংক্রমণযোগ্যতার দিকে তাদের আঙুলি নির্দেশ করেন। যদিও একটি ভাইরাসের অতি সংক্রমণযোগ্যতার ভিত্তিতেই ভাইরাসজনিত কারণে মৃত্যুর হার নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। ভাইরাল সংক্রমণের সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হলো এর তীব্রতা।
ডেল্টা ভেরিয়েন্ট বিশ্বজুড়ে মহামারির তীব্রতা উপলব্ধি করিয়েছে। এটি শুধুমাত্র অত্যন্ত সংক্রামক নয়; এটি প্রচণ্ড জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা এবং রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া পর্যন্ত হালকা থেকে গুরুতর লক্ষণগুলোকে নির্দেশ করেছে।
এটি ‘হালকা’ হবে?
নতুন স্ট্রেনের স্পাইক প্রোটিন ৩০ বারেরও অধিক নিজেকে বদলায়। যা আগের অন্য স্ট্রেনের মতো নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি ভ্যাকসিন প্রতিরোধক্ষমতাকে পাশ কাটাতে পারে। যে কারণে এটি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে।
এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ওমিক্রন শনাক্তকে ‘হালকা’ বলা হচ্ছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) পরামর্শ দিচ্ছে, নতুন রূপটি সহজেই তাদেরও সংক্রমিত করতে পারে যারা আগে ভাইরাসটি দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল কিংবা সব টিকা (বুস্টার ডোজ সহ) নিয়েছে। এদিকে গ্লোবাল হেলথ এজেন্সি বলেছে- ডেল্টার তুলনায় এটি হালকা হবে।
ওমিক্রনে যে নতুন লক্ষণগুলো দেখা যাচ্ছে
ক্লান্তিবোধ
আগের ভেরিয়েন্টের মতোই, কভিডের ওমিক্রন ক্লান্তি বা চরম ক্লান্তির কারণ হতে পারে। একজন ব্যক্তি অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ করতে পারে, শক্তি স্বল্পতা অনুভব করতে পারে এবং তার ভেতর বিশ্রাম নেওয়া প্রবল ইচ্ছা জাগতে পারে। যা তার দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত করতে পারে।
তবে এ কথাও মনে রাখতে হবে, শুধু কভিডের কারণে নয় অন্যান্য কারণ এবং স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও যে কারো ক্লান্তি বোধ হতে পারে। আপনার শারীরিক অবস্থা নিশ্চিত হতে পরীক্ষা করে নিন।
রোগীরা ‘খসখসে গলায়’ কথা বলে
দক্ষিণ আফ্রিকার চিকিৎসক অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজের মতে, ওমিক্রন দ্বারা সংক্রামিত ব্যক্তিরা গলা ব্যথার পরিবর্তে ‘খসখসে গলায়’ কথা বলছেন। যা অস্বাভাবিক। আগেরটি গলার জ্বালার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আর নতুনটি আরো বেদনাদায়ক।
হালকা জ্বর, নিজে থেকেই সেরে যায়
নভেল করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে হালকা থেকে মাঝারি জ্বর হলো কভিডের অন্যতম লক্ষণ। কিন্তু আগের স্ট্রেনের জ্বর রোগীদের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেললেও ডা. কোয়েটজির মতে- বর্তমান ভেরিয়েন্টটি শরীরে হালকা তাপমাত্রা আনে, আবার নিজে থেকেই চলে যায়।
রাতে ঘাম এবং শরীরে ব্যথা
দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরেকটি আপডেটে জানা যায়, ডা. উনবেন পিলে রোগীরা লক্ষণগুলো তালিকাভুক্ত করছেন। তিনি বলেন, রাতের ঘাম ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের অন্যতম লক্ষণ হতে পারে। রাতে এতটাই ঘাম হতে পারে যে যদি আপনি শীতল জায়গায়ও শুয়ে থাকেন, তবুও আপনার কাপড় এবং বিছানা ভিজে যায়। ডাক্তারের মতে, এটি ‘প্রচুর শরীর ব্যথা’সহ অন্যান্য উপসর্গের সঙ্গে দেখা দিতে পারে।
শুকনো কাশি
ওমিক্রন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শুকনো কাশিও দেখা দিতে পারে। এটি আগের স্ট্রেনের মধ্যেও সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি ছিল।
নতুন প্রমাণগুলো দেখে বুঝা যায়, ওমিক্রন শুধুমাত্র হালকা লক্ষণগুলোতেই আপাতত সীমাবদ্ধ থাকছে। আগের ভেরিয়েন্টের লক্ষণগুলোর বিপরীতে ওমিক্রনে গন্ধ বা স্বাদ হারানোর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সেই সঙ্গে এতে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ারও কোনো ঘটনা ঘটেনি।
সূত্র : মিন্ট
বিএসডি/ এলএল