লাইফস্টাইল ডেস্ক,
করোনাভাইরাসের কারণে মৃত্যুর ঘটনা কম নয়। আবার আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হলেও এটি বিভিন্নভাবে শরীরের ক্ষতি করে যায়। করোনা পরবর্তী বিভিন্ন সমস্যা দূর হতে লেগে যায় অনেকটা সময়। এটি যে শুধু ফুসফুসের ক্ষতি করে, তা নয়। বরং মস্তিষ্কের ক্ষতিরও কারণ হয়ে দাঁড়ায়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর মস্তিষ্কের বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগতে দেখা যায় অনেক।
অনেকের মধ্যে দেখা দিচ্ছে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, মনোযোগের দুর্বলতা বা ক্লান্তির মতো হালকা লক্ষণ। যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকে তাদের আরও বেশি সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এই লক্ষণগুলো হতে পারে- মাথাব্যথা, বিভ্রান্তি, বিষণ্ণতা, খিঁচুনি, ফোকাসে অক্ষমতা, স্ট্রোক, আচরণে পরিবর্তন, গন্ধ এবং স্বাদ হ্রাস, চেতনা হ্রাস, ইত্যাদি।
কী কারণে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
করোনাভাইরাস ঠিক কী কারণে আমাদের আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলোকে প্রভাবিত করে, তার সঠিক কারণ এখনও জানতে পারেননি চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। তবে এ নিয়ে গবেষকদের কিছু ধারণা রয়েছে। তাদের মতে, গুরুতর ক্ষেত্রে ভাইরাস কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে (মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ড) প্রবেশ করতে পারে এবং সংক্রমণের কারণ হতে পারে। গবেষণার সময় তারা মেরুদণ্ডের তরলে ভাইরাসের জিনগত উপাদান খুঁজে পেয়েছে। এর আরেকটি কারণ হতে পারে অতিমাত্রায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। শরীর ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করলে প্রদাহ হতে পারে যা টিস্যু এবং অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার কারণে শারীরিক পরিবর্তন যেমন খুব জ্বর, অক্সিজেনের মাত্রা কম বা অর্গ্যান ফেলিওরও ব্রেন কমপ্লিকেশনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। জেনে নিন করোনাভাইরাসের কারণে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা থেকে মুক্তির কিছু উপায়-
ব্রেন চ্যালেঞ্জিং কাজ করুন
পেশী শক্তিশালী করার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের শরীরচর্চা করে থাকি। ঠিক সেভাবেই মস্তিষ্কের পেশীগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য তাকে কিছু মস্তিষ্ক-উদ্দীপক কাজে ব্যস্ত রাখুন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রেন চ্যালেঞ্জিং কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখলে আমাদের মস্তিষ্ক নতুন কোষ গড়ে তুলতে পারে। সেইসঙ্গে উন্নত হতে পারে কনসেনট্রেশন লেভেল।
স্বাস্থকর খাবার খান
এমন অনেক খাবার রয়েছে যেগুলো মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি দ্রুত সুস্থ করে তোলে। সেসব খাবারের মধ্যে রয়েছে সবুজ শাকসবজি, ফ্যাটি ফিশ, বেরি জাতীয় খাবার। এ ধরনের খাবারমস্তিষ্কের রক্তনালী ঠিক রাখে এবং সেরিব্রোভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।
মেডিটেশন করুন
মেডিটেশনের অভ্যাস করুন। এসময় আপনাকে প্রশান্তি দিয়ে পারে ধর্মীয় প্রার্থনাও। মনকে শান্ত করা এবং একাগ্রতা বাড়ানোর অন্যতম সেরা উপায় হলো এগুলো। ধ্যান কিংবা প্রার্থনা মানসিক চাপ কমানোর পাশাপাশি শারীরিকভাবেও দ্রুত সুস্থ করে তোলে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, রক্তচাপ কমাতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে এই অভ্যাস।
প্রশান্তিদায়ক ঘুমের ব্যবস্থা
মস্তিস্কের স্বাস্থ্যের সঙ্গে অনেকটাই জড়িয়ে আছে ঘুম। তাই করোনা থেকে সেরে ওঠার পর প্রতি রাতে নিশ্চিন্ত ঘুমের অভ্যাস করুন। প্রতিদিন রুটিন মেনে ঘুমাতে যান এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান। ছুটির দিনগুলোতেও একই রুটিন মেনে চলুন। পর্যাপ্ত ঘুম নানাভাবে শরীরের উপকার করে। এটি আমাদের প্রতিদিনের কাজ, চিন্তা-ভাবনা, মেজাজ ও স্মৃতিকে প্রভাবিত করে।
বিএসডি/আইপি