ক্রীড়া ডেস্ক:
প্রথম ইনিংসেই যেন ম্যাচের ফল নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকান ফ্যাফ ডু প্লেসির অসাধারণ ব্যাটিংয়ে চেন্নাই সুপার কিংস ১৯২ রান করার পরই যেন লেখা হয়ে গিয়েছিল, আইপিএলের ১৪তম আসরের শিরোপা উঠতে যাচ্ছে কাদের হাতে।
শেষ পর্যন্ত বোলাররা ঠিকই আস্থার প্রতিদান দিলেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। কলকাতা নাইট রাইডার্সকে তারা বেধে রাখলো ৯ উইকেটে ১৬৫ রানে। ২৭ রানে কেকেআরকে হারিয়ে চতুর্থবারেরমত আইপিএল শিরোপা জিতে নিলো চেন্নাই সুপার কিংস।
আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১০বার ফাইনাল খেলেছে চেন্নাই সুপার কিংস এবং এর মধ্যে চারবার শিরোপা জিতেছে তারা। সর্বোচ্চ ৫বার শিরোপা জয় করেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। আর এ নিয়ে ফাইনালে উঠে প্রথম হারলো কলকাতা নাইট রাইডার্স। এর আগে দু’বার ফাইনালে উঠেছিল তারা। দু’বারই হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন। এবারই হারলো তারা।
কাকতালীয়ভাবে কলকাতা নাইট রাইডার্স ফাইনালে খেলা মানেই সেটি হবে হাই স্কোরিং ম্যাচ। আগের দু’বারও তাদেরকে ১৯০ প্লাস রান তাড়া করে জিততে হয়েছিল। ২০১২ সালে চেন্নাই প্রথমে ব্যাট করে ১৯০ রান সংগ্রহ করেছিল। ২ বল হাতে রেখে সেবার কেকেআর জিতেছিল ৫ উইকটের ব্যবধানে।
২০১৪ সালে ফাইনালে কেকেআরের প্রতিপক্ষ ছিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। সেবার ঋদ্ধিমান সাহার অসাধারণ সেঞ্চুরিতে প্রথমে ব্যাট করে পাঞ্জাব স্কোরবোর্ডে রান তুলেছিল ১৯৯। কলকাতা ৩ বল হাতে রেখেই ৩ উইকেটের ব্যবধানে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায়।
এবারও ১৯২ রান তুললো চেন্নাই সুপার কিংস। কলকাতার দুই ওপেনার শুভমান গিল এবং ভেঙ্কটেশ আয়ার যেভাবে ব্যাটিং শুরু করেছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল এবারও বুঝি চেন্নাইর এত বড় স্কোর পাড়ি দিয়ে দেবে কলকাতা।
কিন্তু না, শেষ পর্যন্ত ‘ঠান্ডা মাথার’ অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির চিন্তা এবং পরিকল্পনার কাছে হার মানতে বাধ্য হলো এবার কেকেআরের অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান। যার ফলে ২৭ রান দুরে থাকতেই তাদেরকে থামতে হয়।
জয়ের জন্য ১৯৩ রানের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে দুই তরুণ ওপেনার শুভমান গিল এবং ভেঙ্কটেশ আয়ার যেভাবে শুরু করেছিলেন, তাতে জয়টা দেখতেই পাচ্ছিল কলকাতা। ১০.৪ ওভারে এই দু’জনের ব্যাটে ওঠে ৯১ রান।
এ সময় চেন্নাইয়ের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে দিলেন শার্দুল ঠাকুর। জাদেজার হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন ভেঙ্কটেশ আয়ারকে। ৩২ বলে ৫০ রান করে আউট হয়ে যান আয়ার। ৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৩টি ছক্কার মার মারেন তিনি। ৪৩ বলে ৫১ রান করে আউট হন শুভমান গিল।
ওপেনিং জুটি ভাঙার পর দ্রুততম সময়ের ব্যবধানে একের পর উইকেট পড়তে থাকে। নিতিশ রানা কোনো রানই করতে পারেননি। সুনিল নারিন করেন ২ রান, ইয়ন মরগ্যান আউট হন ৮ বলে ৪ রান করে। পুরো টুর্নামেন্টেই পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলেন মরগ্যান। দিনেশ কার্তিক ৭ বলে করেন ৯ রান। সাকিব আল হাসান মারলেন গোল্ডেন ডাক। মাঠে নেমেই জাদেজার এলবিডব্লিউর শিকার হন তিনি।
রাহুল ত্রিপাঠি করেন ২ রান। শেষ মুহূর্তে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন লকি ফার্গুসন এবং শিবাম মাভি। ১১ বলে ১৮ রান করেন ফার্গুসন। ১৩ বলে ২০ রান করে আউট হন শিবাম মাভি। এ দু’জন শেষ মুহূর্তে ঝড়ো ব্যাটিং করে কেকেআরকে অনেক দুর এগিয়ে দেন। যদিও এতে কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই কমেছে কেবল।
চেন্নাইয়ের হয়ে ৩ উইকেট নেন শার্দুল ঠাকুর। রবিন্দ্র জাদেজা নেন ২টি এবং জস হ্যাজলউডও নেন ২টি উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন দিপক চাহার এবং ডোয়াইন ব্র্যাভো। ব্যাট হাতে ৫৯ বলে ৮৬ রান করার কারণে ফাইনাল সেরার পুরস্কার জেতেন ফ্যাফ ডু প্লেসি। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৯২ রান সংগ্রহ করে চেন্নাই।