নিজস্ব প্রতিবেদক
বাড়তে থাকা খাদ্যপণ্যের তথা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফের পলিসি রেট বা নীতি সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি সপ্তাহে এ সুদহার বাড়ানো হবে। পর্যায়ক্রমে তা আগামী মাসেও বাড়বে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি। বর্তমানে নীতি সুদহার ৯ শতাংশে রয়েছে। এর আগে গত বছরের মার্চ থেকে দেশের মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি থাকায় ঋণ দাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শের সঙ্গে মিল রেখে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়।
সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ হয়েছে। এছাড়া চলতি বছর জুলাইয়ে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়, যা ২০১০-১১ অর্থবছরের পর সর্বোচ্চ।
গেল অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য ঠিক করেছিল সরকার। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি ছিল।
পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২০২২ সালের মে মাস থেকে বেশ কয়েকবার সংকোচনমূলক নীতি অনুসরণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং পলিসি রেট বাড়াচ্ছে। নীতি সুদহার বাড়ানোর ফলে ব্যাংক ঋণের সুদ বেড়েছে এবং ঋণ নেওয়া আগের চেয়ে ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।
ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। গা ঢাকা দেন সাবেক গভর্নর আব্দুল রউফ তালুকদার; পরে পদত্যাগ করেন। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুরকে। গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেন ব্যাংক ও আর্থিক খাতে। ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে পুনর্গঠন করা হয়। পাশাপাশি সুদের হার পরিবর্তন, রিজার্ভের সুরক্ষা দিয়ে আমদানি বাণিজ্যে গতি ফেরানোর কাজও সমানতালে এগিয়ে নিচ্ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।