আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা প্রায় ১৩ মাস ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৪৩ হাজার ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।
যুদ্ধবিরতি আসন্ন বলে বারবার দাবি করা হলেও তেমন কিছুই এখনও পর্যন্ত ঘটেনি। এমন অবস্থায় ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করেছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্সের খবরে বলা হচ্ছে, হামাসের কাছে বন্দি থাকা ইসরায়েলিদের বিনিময়ে কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে দুই দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করা হয়েছে।
মিসরের প্রেসিডেন্ট গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করতে কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েল ও মিসরীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে রোববার আলোচনা করছেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ) এবং ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের পরিচালকরা অংশ নেন।
আলোচনায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করার ওপর জোর দেওয়া হয়। দুই দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব স্থায়ী বিরতিতে যাওয়ার একটা চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। গাজায় গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪২ হাজার ৯২৪ জন নিহত এবং আরও এক লাখ ৮৩৩ জন আহত হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।