নিজস্ব প্রতিবেদক:
তিনি বলেন, শনিবার দুপুরে মোহাম্মদপুর থানা এলাকা থেকে তুফান পরিচয়দানকারী রাকিব মিয়া ওরফে তুফান ও মো. শুকুর আলী, মো. হৃদয় হোসেন এবং মো. শামিমকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে বাসের চোরাই রেজিস্ট্রেশন সনদ, ফিটনেস সনদ ও ট্যাক্স টোকেন উদ্ধার ও জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা শহরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকা থেকে মোবাইল চুরি এবং ঐ মোবাইল দিয়ে ফোন করে বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে গাড়ির মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়। বাসের মালিকরা চক্রটির কাছে জিম্মি ছিল। গ্রেফতারকৃতরা ২০২০ সাল থেকে ঢাকা শহরে চলাচলকারী মিরপুর লিংক, শিকড় পরিবহন, খাজাবাবা পরিবহন, প্রজাপতি পরিবহন এবং রবরব পরিবহনসহ অন্যান্য পরিবহনের বাসে যাত্রীবেশে উঠে এবং অভিনব কায়দায় বাসের রেজিস্ট্রেশন সনদসহ অন্যান্য কাগজপত্র চুরি করে।
তিনি জানান, গাড়ির মালিক, ম্যানেজার ও ড্রাইভারদের নম্বর সংগ্রহ করে চোরাইকৃত প্রতিটি গাড়ির কাগজের জন্য ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করত তারা। মালিকরা প্রথম দিকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে চক্রটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ক্ষতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। কাগজপত্রবিহীন অবস্থায় রাস্তায় বাস চালাতে না পারায় বাসের মালিকরা চক্রের দেওয়া মোবাইল ফোন নম্বরে কথা বলে চাঁদার পরিমাণ কমিয়ে চোরাইকৃত প্রতিটি গাড়ির কাগজের জন্য ৫ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করেন। চক্রটি টাকা পেয়ে কিছু গাড়ির কাগজপত্র ফেরত দেয় এবং কিছু কাগজপত্র আটকে রাখে।
তিনি জানান, আটকে রাখা গাড়ির কাগজপত্র ফেরত দেওয়ার শর্তে মিরপুর লিংক, খাজাবাবা ও বিকল্প পরিবহন বাসের মালিকদের মাসিক চাঁদা দিতে বাধ্য করে। অন্য মালিকরা মাসিক চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় চক্রের হোতা তুফান নাম-পরিচয় দিয়ে মালিকদের এমন হুমকি প্রদান করে যে, ‘আমি তুফান, আমাকে ঢাকা শহরের অধিকাংশ পরিবহনের মালিকেরা মাসিক চাঁদা দেয়। কোনো পরিবহনের মালিক মাসিক চাঁদা না দিলে আমি ঐ সমস্ত গাড়ির কাগজ চুরি করেই যাব, ঢাকা শহরের কোনো পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করতে পারবে না’। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গাড়ির মালিকরা ঢাকার বিভিন্ন থানায় বিষয়টি অবহিত করে সাধারণ ডায়ারি করেন। কিন্তু তাতেও কোনো ফল না পাওয়ায় বাসের মালিকরা বিষয়টি সিআইডি পুলিশকে অবহিত করেন। এরপর তদন্ত করে চক্রটির বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে গ্রেফতার করা হয়।
বিএসডি/ফয়সাল