বিশ্ব রেকর্ডের জন্য ভিডিও ফুটেজ, রাস্তার জরিপ প্রতিবেদন, অনেক হিসাব-নিকাশ, বিচারকদের প্রতিবেদনসহ আনুষঙ্গিক অনেক নথিপত্র জমা দিতে হবে। এগুলো গুছিয়ে পাঠাতে তিন-চার দিন লেগে যাবে। তারপর স্বীকৃতি আসতে কমপক্ষে সাত দিন লাগবে, জানালেন সাইক্লিস্টেরা।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটা থেকে শুক্রবার সকাল সাতটা পর্যন্ত বৃষ্টি ঝরেছে। সঙ্গে ছিল প্রচণ্ড শীত। সবাই ভেবেছিলেন, গতি কমে যাবে সাইক্লিস্টদের। কিন্তু সব ধারণা তুচ্ছ করে দুরন্ত বেগে ছুটেছেন তানভীর ও আলাউদ্দীন। ‘শীত, বৃষ্টির ধকলটা ওদের ওপর দিয়েই গেছে। একেকজন কাদাপানি মেখে একাকার। আমি আর রাকিবুলের তখন ছিল ঘুমানোর পালা’, বলছিলেন দ্রাবিড়।
গতকাল বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার চালানো হয়ে যায়। আর মাত্র ৩০০ কিলোমিটার বাকি ছিল। দুপুর পর্যন্ত সাইকেলের গড় গতিবেগ ৩৪ কিলোমিটারের বেশি ছিল। তখনই তাঁরা হিসাব কষে দেখেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টা পুরোপুরি চালালে তাঁদের ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটারের বেশি চালানো হয়ে যাবে। শুরুর রাইডার ছিলেন দ্রাবিড়, আর শেষটা করলেন রাকিবুল।
এমনিতেই রাজধানীর পূর্বাচলের এদিকটায় রাতে তাপমাত্রা ১০-১২ ডিগ্রিতে নেমে আসে। বুধবার রাতে প্রচণ্ড ঠান্ডা ছিল, ছিল ভয়াবহ কুয়াশা। এর মধ্যেই ছুটতে হয়েছে তাঁদের, বলছিলেন দ্রাবিড়। তারপরও রাতে গতি ভালোই থাকে। বরং সমস্যা হয় দিনে। অনেক বাতাস থাকে, গতি যায় কমে।
খাওয়াদাওয়া, ঘুম কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে দ্রাবিড় বলেন, খাওয়ায় সমস্যা নেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে নুডলস, রাতে স্প্যাগেটি খেয়েছেন। মাঝে পুরিও খেয়েছেন। এখন আর স্বাস্থ্যকর খাবার বাছবিচার করছেন না। যা পাচ্ছেন, খেয়ে নিচ্ছেন। তবে ঘুম আসতে সময় লাগছে। শিয়ালের ডাক শুনতে শুনতে ঘুমান, ঘণ্টা দেড়েকের ঘুম।
গত বুধবার রাত ৮টা ৩৮ মিনিটে রাইড শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার মধ্যে ৪০০ কিলোমিটার চালানো হয়ে যায়। রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে শেষ হয় আরও ৪২৫ কিলোমিটার।
টিমবিডিসির এ উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে শামিল হয়েছেন অনেকে। তাঁরাই এ রাইডের প্রাণ বলছেন সবাই। আর পেসার, যাঁরা সারাক্ষণ ধরে লেপ্টে আছেন সাইক্লিস্টদের সঙ্গে। মূল রাইডারদের সঙ্গ দিতে সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছেন আনসাং এ হিরোরা।
এর আগে ২০১৬ সালের বিজয় দিবসে ১ হাজার ১৮৬ জন মানুষ ধীরগতিতে সাইকেল চালিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন। চলন্ত সাইকেলে দীর্ঘতম একক সারির রেকর্ডটি দীর্ঘদিন বিডিসাইক্লিস্টসের ঘরেই ছিল। এবার নতুন রেকর্ড গড়তে সাইকেলে সওয়ার হয়েছেন চারজন।
বিশ্ব রেকর্ডের জন্য টিমবিডিসি পূর্বাচলে জয়নুল আবেদীন চত্বরটি বেছে নিয়েছিল। ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার রাস্তায় গত দুদিনে প্রায় ১ হাজার ৩ চক্কর দিয়েছেন তাঁরা।
বিএসডি/ এলএল