ফিচার ডেস্ক,
বিশ্বজুড়ে এক আতঙ্কের নাম- করোনাভাইরাস। অদৃশ্য প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ইতোমধ্যে কেড়ে নিয়েছে লক্ষ মানুষের প্রাণ। ধারণা করা হচ্ছে, মধ্য চীনের উহান শহর থেকে এই রোগের সূচনা। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর এই শহরে নিউমোনিয়ার মতো একটি রোগ ছড়াতে দেখা যায়। এরপরেই চীনের পক্ষ থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। তবে ঠিক কীভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয় এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। তবে ধারণা করা হয়, কোনো প্রাণি থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণের সূত্রপাত, যা মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়েছে।
এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, ঘরের মানুষও করোনাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই মনে রাখতে হবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছোঁয়াচে। কিন্তু আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে না এলে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি নেই বললেই চলে। বাড়িতে কারো করোনার সংক্রমণ হয়েছে সন্দেহ হলে চারটি বিষয় শুরুতেই নিশ্চিত করতে হবে। প্রথমেই তাকে আইসোলেশনে থাকতে হবে। এ জন্য রেজাল্ট পজিটিভ এলে তারপর আইসোলেশনের ব্যবস্থা- এই ভাবনা একেবারেই ভুল। এরপর দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। নিরাপত্তা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে এবং রোগীর কাছ থেকে অন্যদের সুরক্ষার কথা ভাবতে হবে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে যদি একই ঘরে থাকতে হয়, তাহলে সবসময় সার্জিক্যাল মাস্ক পরে থাকতে হবে। অন্তত তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ঘরের দরজা জানালা খুলে রেখে আলো-বাতাস চলাচল অব্যাহত রাখতে হবে। আলাদা টয়লেট ব্যবহার করতে পারলে ভালো। না হলে রোগীর টয়লেট ব্যবহারের পর জীবাণুনাশক দিয়ে টয়লেট ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। রোগী অবশ্যই আলাদা খাবার প্লেট, গ্লাস ব্যবহার করবেন।
দিনে অন্তত দু’বার রোগীর দেহের তাপমাত্রা এবং অক্সিজেন লেভেল মাপুন। তাপমাত্রা কখনই যেন ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের উপরে না যায়। অক্সিজেনের মাত্রা ৯৪ শতাংশের নিচে এলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। এ সময় ঘরে থার্মোমিটার এবং পালস অক্সিমিটার রাখা উচিত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া সত্যিই কঠিন। তাই ব্যক্তিগত সুরক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। এ জন্য নিয়ম মতো মাস্ক ব্যবহার করা, হাত ধোয়া এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ।
এরপর রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, করোনা ভাইরাস জনিত সমস্যা। ব্যাকটেরিয়া নির্মূলের ওষুধে ভাইরাস নির্মূল আদৌ সম্ভব নয়। যদিও করোনা রোগের চিকিৎসায় কিছু ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে যেমন, এজিথ্রোমাইসিন, ডক্সিসাইক্লিন, মন্টিলুকাস্ট, ফেক্সোফেনাডিন, ডক্সোফাইলিন, ইভারমেকটিন, হাইড্রোক্সিক্লোরকুইন সালফেট, রেমডিসিভির, ফ্যাভিপিরাভির ইত্যাদি। এগুলোর কোনোটিই সরাসরি করোনা রোগের ওষুধ নয়। করোনার চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মূলত উপসর্গ ও জটিলতার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে। উল্লেখিত ওষুধগুলো মূলত আক্রান্তদের উপসর্গের ভিত্তিতে ব্যবহার করা হয়।
বিএসডি/এমএম