নিজস্ব প্রতিবেদক
বাজারে চিনির দাম স্বাভাবিক ও সাশ্রয়ী মূল্য ধরে রাখতে অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে শুল্ক কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্যারিফ অ্যান্ড ট্রেড কমিশন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠানো চিঠিতে আপরিশোধিত ও পরিশোধিত চিনি আমদানিতে বিদ্যমান নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) ৩০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করার সুপারিশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠানটির বাণিজ্য নীতি শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। যেখানে ট্যারিফ কমিশন শুল্ক কমানোর পক্ষে বিভিন্ন যুক্তির উপস্থাপন করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানে স্থানীয় বাজারে চিনির বর্ধিত চাহিদা সৃষ্টি হয়। বর্ধিত এই চাহিদা বিবেচনায় চিনির সামগ্রিক সরবরাহ ব্যবস্থা স্থিতিশীল রাখার জন্য চিনি পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে এখনই চিনি আমদানির নিমিত্ত এলসি খুলতে হবে। গত এক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত চিনির মূল্য ৩৯৪ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৭৬.১৯ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বৃদ্ধির হার ২০.৮১ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার এবং আসন্ন পবিত্র রমজানে যৌক্তিক মূল্যে চিনি সরবরাহের নিমিত্ত শুল্ক হ্রাসের বিষয়টি বিবেচনা করা প্রয়োজন।
তাই সার্বিক পর্যালোচনার আলোকে এবং বিশেষভাবে আসন্ন রমযানে বর্ধিত চাহিদা বিবেচনায় এনে সার্বিকভাবে চিনির বাজারমূল্য স্থিতিশীল এবং একইসঙ্গে আনুষ্ঠানিক পদ্ধতিতে চিনি আমদানি উৎসাহিতকরণে আপরিশোধিত ও পরিশোধিত চিনি আমদানিতে বিদ্যমান নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) ৩০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা যেতে পারে। একইসঙ্গে সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি বৃদ্ধিতে আইন প্রয়োগকারী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে বলে সুপারিশ করেছে ট্যারিফ কমিশন।
প্রতি বছর দেশে সাড়ে ১৭ লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। চাহিদা মেটাতে ৯০ শতাংশ চিনি আমদানি করা হয়ে থাকে। আমদানির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।
বর্তমানে চিনি আমদানিতে ৫ ধরনের শুল্ক-কর রয়েছে। প্রতি টন অপরিশোধিত চিনিতে আগে আমদানি শুল্ক ছিল নির্ধারিত ৩ হাজার টাকা। গত নভেম্বরে তা কমিয়ে অর্ধেক অর্থাৎ ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়। এর বাইরে অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি), ৩ শতাংশ অগ্রিম কর (এটি) এবং ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) রয়েছে।
এছাড়া পরিশোধিত চিনিতে বর্তমানে আমদানি শুল্ক নির্ধারিত ৩ হাজার টাকা, ভ্যাট ১৫ শতাংশ, এআইটি ৫ শতাংশ, এটি ৫ শতাংশ এবং আরডি রয়েছে ৩০ শতাংশ। ট্যারিফ কমিশন বিদ্যমান ওই ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা সুপারিশ এনবিআরের কাছে করেছে।