নিজস্ব প্রতিবেদক:
আওয়ামী লীগকে ডাকাতের সরকার আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকারকে চোর বললে ভুল বলা হবে, এটা ডাকাতের সরকার। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে পৌর বিএনপির সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ২০১৪ সালের আন্দোলনে আমাদের ৯ জন ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। সে কথা আমরা ভুলিনি। সাড়ে ৭ হাজার লোকের নামে মামলা এখানে এবং মামলার সংখ্যা প্রায় ৭০০। গত নির্বাচনে কিছুই জানে না! নিজেরাই গাড়ি পুড়িয়েছে, নির্বাচনী অফিস পুড়িয়েছে তারপর সব আমাদের নেতা-কর্মীদের নামে মামলা দিয়ে দিয়েছে। বাড়ি বাড়ি তল্লাশী, ঘরছাড়া করে দিয়েছে।
আজ দেখে যান আওয়ামী লীগের ভাইরা, এতটুকু দমাতে পারেননি কাউকে। সবাই নিজের পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে এখানে উপস্থিত হয়েছে। পরোয়া করি না, কত মামলা দেবেন দেন। আমরা আছি, আমরা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়েই ঘরে ফিরবো। আমরা ওইভাবে নিজেদের তৈরি করেছি। আমরা কখনো দমে যাইনি। আমরা ৯১ সালের আগে থেকে এখানে লড়াই শুরু করেছি। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী রাজনীতি এখানে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য, বলেন তিনি।
ফখরুল আরও বলেন, এখন এত খারাপ সময়! ঠাকুরগাঁওকে শান্তির নিবাস বলতাম আমরা। মৌজার নামও নিশ্চিন্তপুর। এখানকার মানুষ আসলেও আমরা নিশ্চিন্ত হয়ে থাকতে ভালোবাসি। ২০১৪ সালের আগে মামলা-মোকদ্দমা আমরা দেখিনি। এমনও হয়েছে ওই সময়, প্রচণ্ড শীতের মধ্যে গাছের ওপর কাটাতে হয়েছে, ধানখেতে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে। সেই কষ্ট-যন্ত্রণা-ব্যথা আমরা ভুলিনি। পাই পাই করে প্রত্যেকটার হিসাব নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এই দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কখনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না। আওয়ামী লীগ ৭৩ সালে একটা নির্বাচন করেছিল, স্বাধীনতার পরে। ওই নির্বাচনে একই অবস্থা ছিল। বিরোধী দল যারা ভোট করেছিল তারা কেন্দ্রেই যেতে পারেনি। ভোটাররা যেতে পারেনি। ওই সময় যখন প্রবল জনপ্রিয়তা, শক্তি সব কিছু আওয়ামী লীগের, সেই সময় রাশেদ খান মেনন, কুমিল্লার ইঞ্জিনিয়ার রশীদসহ ওই এলাকাগুলো থেকে হেলিকপ্টারে করে ভোটবাকশো নিয়ে এসে সিল মেরে তারা তাদের প্রার্থীদের নির্বাচিত করেছিল। এটা তাদের পুরনো অভ্যাস, ক্ষমতায় থাকলে সেই ক্ষমতার যথেচ্ছ ব্যবহার করে তারা।
আজ আপনাদের সামনে সব সময় মিথ্যা কথা বলে। গতকাল সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ১ কোটি কার্ড দিয়েছে। টিসিবির ন্যায্য মূল্যে চাল-ডাল কিনতে পারবে জন্য ১ কোটি কার্ড দিয়েছে। কালকেই পত্রিকায় এসেছে, এখানে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীকে কার্ড দেওয়া হয়েছে। পাশেই দিনমজুর ভাই, ছাপড়ার মধ্যে বাস করে সে কোনো কার্ড পায় না। কার্ড যারা পায় তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়। ১০ টাকা কেজি চাল কেনার কিছু কার্ড দিয়েছে, উল্টা আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকা দিতে হয়। যেদিকে তাকাবেন দুর্নীতি, দুর্নীতি, দুর্নীতি ছাড়া আর কিছু নেই—বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আমরা চিন্তাও করতে পারি না, একটা সভ্য দেশে এভাবে চুরি-ডাকাতি হতে পারে। এই সরকারকে চোর বললে ভুল বলা হবে, এটা ডাকাতের সরকার। আজকের কথা না, ১৯৭২ সালে যখন ক্ষমতায় এসেছিল তখনো তারা এই কাজগুলো করেছিল। এমন করেছিল যে তাদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, আমি যেদিকে তাকাই দেশি শুধু চোরের দল। তার কম্বলটা পর্যন্ত লুট হয়ে গিয়েছিল। বলছেন, এত কম্বল আসলো বিদেশ থেকে, সব মানুষের জন্য একটা করে, আমার কম্বলটা গেল কোথায়? শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব নিজে বলেছেন, আমি তো বলছি না! এই হচ্ছে আওয়ামী লীগ। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী তখনই বলেছিলেন, এই দলটার নাম এখন পরিবর্তন করে ফেলা উচিত, এটার নাম দেওয়া উচিত নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি। যেদিকে তাকাবেন শুধু লুটপাট।
বিএসডি/ এলএল