নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারী জেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভুট্টার চাষ। বিগত কয়েক বছর থেকে ভালো ফলন, খরচ কম, লাভ বেশি হওয়ায় এখানকার কৃষক ঝুঁকে পড়েছে ভুট্টা চাষের দিকে। এতে প্রতি বছর ভুট্টা চাষের জমি বাড়ছে। বর্তমান ভুট্টা আবাদ ও দামে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
পাশাপাশি উপজেলা কৃষি অফিস চাষিদের আগ্রহী করে তুলতে কৃষকদের মাঝে সার, বীজ প্রদানসহ দিচ্ছেন সার্বিক পরামর্শ। প্রতি বছর ভুট্টার চাষ করে কৃষক, বর্গাচাষী ও ব্যবসায়ী লাখ টাকা আয় করে ভাগ্যের পরিবর্তন আনছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, যে ভাবে ভুট্টার ব্যবহার বাড়ছে সেভাবে এ অঞ্চলে ভুট্টা ভিত্তিক কোন কলকারখানা গড়ে উঠেনি। তবে এ অঞ্চলে ভুট্টার আটা ও পশু খাদ্য তৈরির মিল স্থাপন করা হলে এর চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে। চাষিরাও তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য পাবে। সৃষ্টি হবে নতুন কর্ম সংস্থান। ভুট্টা বিক্রি করে শুধু নগদ অর্থ প্রাপ্তি নয়, ভুট্টা পোলট্রি ও মাছের খাদ্য ছাড়াও মানুষের নিরাপদ ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাদ্য হিসেবেও এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। সবুজ পাতা উৎককৃষ্ট গো-খাদ্য, গাছ জ্বালানিসহ দানা ছড়ানোর পর অবশিষ্টাংশ মদনা বস্তা প্রতি বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ২০০টাকা দরে। ফসলের জগতে ভুট্রায় ত্রি-মুখী লাভ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিস্তৃর্ণ সমতল ভূমিতে আলুর পর চাষ হচ্ছে ভুট্টার। এতে খরচ আরো কম। মাঠজুড়ে সবুজ সমারহে ভুট্টার উঠতি চারা শোভা পাচ্ছে। বাতাসে ঝিলমিল করে দুলছে ভুট্টার সবুজপাতা। কৃষক অধীর আগ্রহে মনের খুশিতে মাঠে কাজ করছে ফসল ঘরে তোলার জন্য।
বড়ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর গ্রামের কৃষক মোজাফফর হোসেন জানান, প্রতি বিঘায় খরচ হয় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। হাইব্রিড জাতের বীজে ফলন হয় ৩৫ থেকে ৩৮ মন। যার বাজার মূল্য ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ফসল ঘরে ওঠা মাত্রই বহুমুখী খরিদ থাকায় খুব সহজে কাঁচা ভুট্টা ৫শ থেকে ৬শ টাকা, শুকনা ভুট্টা বিক্রি হয় ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা।
পুটিমারী ইউনিয়নের ভেড়ভেড়ি গ্রামের কৃষক ওলিয়ার জানান, স্বল্প মূল্যে ভুট্টার চাষ করে এখনকার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন এসেছে। যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরোয় এখন তারাও সচ্ছল।
উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের মশিয়ার রহমান জানান, তার কোনো জমি নেই। প্রতি বছর জমি বর্গা বা চুক্তি নিয়ে ভুট্টা আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। এলাকার এরকম অনেক কৃষক ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, চলতি বছর প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছরও বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন।
বিএসডি/ এলএল