জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী মো. আকবর হোসাইন খান রাব্বি’র মৃত্যুর দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মানবন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে আকবরের রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার (৯ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে দুপুর ১২ টায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সহপাঠীরা সঠিক তদন্ত দোষীদের বিচার না হলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুশিয়ারি দেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল, ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন, বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ, সহকারী প্রক্টর ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ দুমাস পার হয়ে গেলেও অপরাধীরা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে, পুলিশ এথনো সন্তোষজনক কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি। কে বা কারা, গত ২৭ আগস্ট রাতে পরিকল্পনা মাফিক আকবরকে ঢাকা হতে চট্টগ্রাম নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে , তা এখনও এক রহস্য রয়ে গেছে। আকবর এর মোবাইল ফোনটি ঘটনার এক দুইদিনের মধ্যেই থানা থেকে লক খুলতে গিয়ে হার্ড রিসেট দেয়া হয়, ফলে তার ফোন থেকে কোনো কিছু পাওয়া যায়নি।
পুলিশ এখনো সন্তোষজনক কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও জানানো হয়, আমাদের সহপাঠীর সাথে খুব অন্যায় হয়েছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাদের একজন সহপাঠীর এমন রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
দ্রুত সঠিক তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবি জানান বক্তারা। তা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন বলেন, আকবরের মৃত্যুতে আমরা একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে হারিয়েছি। অতি দ্রুত তার মৃত্যুর রহস্য যাতে উদঘাটন হয় এবং দোষীরা যাতে শাস্তি পায় সেই দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে তার সহপাঠীদের অনুরোধ করবো তারা যেন আকবরের পরিবারের খোঁজখবর রাখে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আকবরের হত্যা নিয়ে খুলশী থানার ওসি জানিয়েছে, এটা পিবিআই তদন্ত করেছে। পিবিআই থেকে এখন সিআইডি এর কাছে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। তবে আকবরের পরিবার থেকে আবেদন দেওয়া হয়েছে যেন পিবিআই তদন্ত করে। আমরা আশা করি আকবর হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং আমরা বিচার পাবো।
উল্লেখ্য, আকবর ২৭ আগস্ট সকালে ঢাকার সূত্রাপূরের একটি মেস থেকে শার্ট-প্যান্ট পড়ে, ব্যাগে ল্যাপটপ-ফোন নিয়ে বের হয়ে যায়। এরপর রাত ৮.৫৩ টার দিকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আকবরের বন্ধু ফয়সালকে ফোন করে জানায়, একটি ছেলে চট্টগ্রাম জিওএস মোড় ফ্লাইওভার থেকে নিচে পড়ে যায়, পরবর্তীতে পুলিশ এসে তাকে অজ্ঞান ও মাথার পিছনে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয় এবং ১ সেপ্টেম্বর ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়।