আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজে প্রত্যাবর্তনের পর প্রথমবারের মতো ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো যুক্তরাষ্ট্র । বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়। মূলত: ইরানের ‘তেল নেটওয়ার্ক’ লক্ষ্য করে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
এই পদক্ষেপের আওতায় রয়েছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান, জাহাজ ও ব্যক্তি, যারা ইতোমধ্যে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনও একইভাবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখতে এ ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করত।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইরানি সরকার এখনো তাদের তেল রাজস্ব ব্যবহার করে পারমাণবিক কর্মসূচি বিকাশ, প্রাণঘাতী ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ড্রোন তৈরির পাশাপাশি আঞ্চলিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, ইরান যেন কোনোভাবেই এসব ক্ষতিকর কার্যক্রমের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে না পারে।”
ইরান দীর্ঘদিন ধরে তাদের তেল খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং তেল রপ্তানি আটকে দেওয়ার প্রচেষ্টাকে ‘ডাকাতি’ বলে নিন্দা জানিয়ে আসছে।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় চীন, ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বেশ কিছু ব্যক্তি ও সংস্থা রয়েছে।
২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি, যা জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন নামে পরিচিত, ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করার বিনিময়ে তাদের অর্থনীতির ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্তে হয়েছিল।
বাইডেন প্রশাসন চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করলেও, ইরানের সঙ্গে একাধিক দফা পরোক্ষ আলোচনা ব্যর্থ হয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হলে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরও বাধাগ্রস্ত হয়।
সাবেক প্রশাসন ইরানের বিরুদ্ধে থাকা নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছিল এবং নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
এই সপ্তাহে ট্রাম্পের জারি করা নির্বাহী আদেশে মার্কিন কর্মকর্তাদের ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় পর্যালোচনা ও কঠোর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে ‘ইরানের তেল রপ্তানি শূন্যে নামিয়ে আনা যায়।’
ট্রেজারি বিভাগের বৃহস্পতিবারের নিষেধাজ্ঞা সেই নির্দেশের প্রতিক্রিয়ায় জারি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।