নিজস্ব প্রতিবেদক,
অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ না করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম। বাম ধারার এ সংগঠনের নেতাদের দাবি, অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে সরকার তা স্তদ্ধ করার প্রয়াস হিসেবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করছে।
এ আইন অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ আড়াল করার আইন। গণমাধ্যমবিরোধি এই আইনে অনেক সাংবাদিক, কার্টুনিস্ট ও লেখকদের জেল-জুলুম নিপীড়ন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রংপুর নগরের কাঁচারি বাজার এলাকায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন সমাবেশ থেকে এ অভিযোগ তুলেন জেলা সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম নেতারা। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে এ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।
সমাবেশে সংগঠক গোলাপী বেগমের সভাপতিত্ব বক্তব্য রাখেন, রংপুর জেলা বাসদের আহ্বায়ক আব্দুল কুদ্দুস, সদস্য সচিব মমিনুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সংগঠক মৌসুমি আক্তার মৌ, রিনা মুরমু, রিমা আক্তার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের মহানগর সভাপতি যুগেশ ত্রিপুরা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দেড় বছর থেকে করোনা দুর্যোগে সারাদেশ আজ বিপর্যস্ত। মহামারিতে লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়ে শ্রমজীবী মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়েছে। একদিকে দেশের শ্রমজীবী গরিব মানুষ তাদের জীবন-জীবিকা নিয়ে যেমন সংকটে পড়েছে। বিপরীতে হাতে গোণা কিছু দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষ কোটি টাকার মালিক হয়েছে।
তারা অভিযোগ করেন, করোনাকালে সরকারের মন্ত্রী-আমলারা লুটপাট-দুর্নীতি-অনিয়মে ব্যস্ত। তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি চিত্র গণমাধ্যমে প্রকাশ করলে সরকার তা স্তদ্ধ করার প্রয়াস হিসেবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করছে। এই কালোআইনে গণমাধ্যমকর্মীসহ কার্টুনিস্ট, লেখক, সাংবাদিকদের জেল জুলুম নিপীড়ন করা হয়েছে।
করোনার সময়ে নারী-শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ বেড়েছে ভয়াবহভাবে। সরকার স্বাস্থ্যখাতে লুটপাট, অনিয়ম-দুর্নীতি সামাল দিতে গিয়ে নারী-শিশু নির্যাতনের বিচার করছে না। অবিলম্বে এসব নির্যাতনের বিচার দাবি করে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশ যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পার করছে ,তখন দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর বিশেষ করে নারীর জীবনমানের এখনো পরিবর্তন ঘটেনি। এই পরিস্থিতিতে নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই।
এসময় নারী-শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ করার জন্য রাষ্ট্রের শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, নারী-পুরুষের সম্পত্তিতে সমানাধিকার নিশ্চিতকরণ ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করার দাবি তোলা হয়। পরে সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তিন দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন ফোরামের নেতাকর্মীরা।
বিএসডি/আইপি