মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি:

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক সমর্থককে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে ইউনিয়নের ঢালীকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ উঠেছে, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রিপন হোসেনের লোকজন ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রিপন বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য তার নামে মিথ্যা বলা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বিল্লাল গাজী মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী রানু বেগমের সমর্থক। তিনি তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (আনারস প্রতীক) মহসিনা হক কল্পনারও সমর্থক বিল্লাল। রানু বেগমের পক্ষে কাজ করায় তার প্রতিপক্ষ নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী ডলি বেগমের স্বামী রতনের সঙ্গে বিল্লালের শত্রুতা তৈরি হয়। রতন নৌকার পক্ষে কাজ করছেন।

বিল্লালের স্ত্রী সেতু বেগম বলেন, শুক্রবার আমরা ঘরে ছিলাম। রাত পৌনে ৯টার দিকে ১০-১৫ জন আমাদের বাড়িতে আসে। বিল্লালকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায়। পরে বাড়ির পেছনের জমিতে নিয়ে বেদম পেটায়। পরে জানতে পারি রতন, শিপনরা আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে মেরেছে। তার পায়ে গুলি করেছে। তার অবস্থা ভালো নয়।

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তোফাজ্জল হোসেন জানান, রাত সোয়া ৯টার দিকে এক ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কোথাও গুলির চিহ্ন নেই। শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রিপন হোসেন বলেন, বিল্লাল গাজীকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। তবে শুনেছি বিল্লাল সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থী রানু বেগমের পক্ষে নির্বাচন করেছিলেন।
রানুর প্রতিপক্ষ ডলি বেগমের স্বামী রতন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিল্লাল গাজীর ঝগড়া হয়েছে। রতন বিল্লাল গাজীকে মারধর করেছে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য আমার নামে মিথ্যা বলা হচ্ছে। আমি কোনো রকম হানাহানি চাই না। আমার লোক কোনো রকম ঝামেলায় জড়ালে আমি নিজেই তাদের আইনের হাতে তুলে দিব।

মুন্সিগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য টঙ্গিবাড়ী ও মুন্সিগঞ্জের কয়েকটি এলাকায় আমাদের সদস্যরা নিয়মিত টহল দেন। তবে কারও বাড়িতে কোনো অভিযান চালানো হয়নি।

মুন্সিগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমরা শুনেছি ওই ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে ডিবি পরিচয় দিয়ে কিছু লোক তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে পিটিয়ে আহত করেছে। খবর পাওয়া মাত্র রাতেই ঘটনাস্থলে যাই। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। তবে যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ কাজ করছে।