জাককানইবি প্রতিনিধি:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (ইএসই)ক্লাস-পরীক্ষা নিয়মিত না হওয়ায় বিভাগে সৃষ্টি হয়েছে সেশন জট।এর কারণ হিসেবে বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে অন্তকোন্দলকে দায়ী করছে।
বিভাগটির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়,
চলতি বছরের জুন মাসের ১৩ তারিখ বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকী বিভাগের নাম ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’ থেকে পরিবর্তন করে ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট চেইঞ্জ’ করা যায় কি না এমন প্রস্তাব তোলেন।এতে তার সাথে বিভাগের অন্য শিক্ষকদের বাক-বিতণ্ডা হয়। বিতণ্ডার এক পর্যায়ে এদিন সকালে বিভাগীয় প্রধানকে প্রায় দেড় ঘন্টা তার অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও প্রক্টর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ড. আশরাফকে বের করে আনেন।
এই ঘটনার পর থেকেই বিভাগটিতে ক্লাস, পরীক্ষা অনিয়মিত। এই ঘটনার পূর্বে থেকেই রয়েছে সেশন জট।
বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, (২০১৫-১৬) শিক্ষাবর্ষে অনার্স শেষ হয়নি সাড়ে ছয় বছরেও।
বিভাগের এই চরম সেশনজটের স্বীকার (২০১৬-১৭)শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা বলেন,আমাদের সেশনে অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনার্সের ৮ম সেমিস্টার ও মাস্টার্সের ১ম সেমিস্টার পরিক্ষা দিচ্ছে সেখানে (ইএসই) বিভাগের একই সেশনের শিক্ষার্থীরা ৩য় বর্ষের ২য় সেমিস্টার পরিক্ষা এখনো শেষ করতে পারেনি।আমাদের তৃতীয় বর্ষের ভাইবা নিতে চলে যাচ্ছে তিন মাস। সেশনজট এই করাল গ্রাসে অনেকেই এখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে আরও বলেন,
কোন শিক্ষকে কোন কিছু বলতে গেলে শিক্ষার্থীদের নানান ধরনের হুমকি-ধমকি পর্যন্ত দিয়ে থাকেন শিক্ষকরা।এবং শিক্ষকদের মধ্যে চরম স্বেচ্ছাচারিতা রয়েছে ।এক শিক্ষক অন্য শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে টাকা লেনদেন করে।
বিভাগের সেশন জট ক্লাস নিয়মিত না হওয়া কারণ জানতে চাইলে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো নাকিবুল হাসান খান, সহকারী অধ্যাপক মো রকিবুল হাসান,সহকারী অধ্যাপক মো আলিম মিয়া এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি নয়।
বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর আশরাফ আলী সিদ্দিকী বিভাগের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে বলেন, ঐ ঘটনার পর থেকে এখনো মানসিক ভাবে বিভিন্ন চাপ দেওয়া হচ্ছে।আমি শারীরিক ও মানসিক ভাবে অসুস্থ তাই নিয়মিত কিছু করতে পাচ্ছিনা।
তিনি আরও বলেন, ক্লাস পরীক্ষার বিষয়ে বলেন এগুলো আমি কি একা সমাধান করতে পারবো সবাই যদি সবাই একসাথে কাজ না করে আমি একা কীভাবে সব কাজ করবো। এখানে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে। বিভাগীয় প্রধান হিসেবে ড. আশরাফের দায়িত্ব বিভাগটিকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করা। অন্যদের উচিত তাকে সহযোগিতা করা।’
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ওই বিভাগের এমন পরিস্থিতির বিষয়টি মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের অবগতিতে আছে। তিনি দ্রুত এই সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নিবেন। তবে বিভাগের শিক্ষকদের টানাটানিতে শিক্ষার্থীদের না জড়ানোই ভালো। এখানে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে। বিভাগীয় প্রধান হিসেবে ড. আশরাফের দায়িত্ব বিভাগটিকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করা। অন্যদের উচিত তাকে সহযোগিতা করা।’
এর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড.সৌমিত্র শেখর বলেন,আমরা তাদের কে বলেছি তারা যদি কার্যক্রম শুরু না করে আগামী মঙ্গলবার/বুধবার থেকে আমাদের সিস্টেম চালু করে দেবো।
বিএসডি/ফয়সাল