জরুরি ভিত্তিতে গতকাল সোমবার গভীর রাতে ভার্চ্যুয়াল সভা করে নাটোর সদর ও সিংড়া পৌর এলাকায় সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি দিবাগত রাত একটার দিকে এ সিদ্ধান্ত নেয়। জেলায় করোনা সংক্রমণের হার ৬৭ দশমিক ৩০ শতাংশে পৌঁছানোর দিনই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
গতকাল রাত ১১টার দিকে নাটোরের জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজের সভাপতিত্বে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরি সভা শুরু হয়। সভায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ, নাটোরের অন্য তিন সাংসদ, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা যুক্ত হন। সভার শুরুতে সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমান সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি নাটোরে সর্বাত্মক লকডাউনের সুপারিশ করেন।
পরে সভায় অংশগ্রহণকারী অন্যদের কাছে লকডাউনের ব্যাপারে মতামত চেয়ে জরিপ পরিচালনা করা হয়। সেখানে অধিকাংশ অংশগ্রহণকারী সর্বাত্মক লকডাউনের পক্ষে মত দেন। আলোচনা শেষে রাত সোয়া একটার দিকে জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন, আগামীকাল বুধবার সকাল ছয়টা থেকে পরবর্তী সাত দিন নাটোর সদর ও সিংড়া পৌরসভা এলাকায় সর্বাত্মক লকডাউন বলবৎ হবে। লকডাউনের ক্ষেত্রে জাতীয় নীতিমালা অনুসরণ করা হবে বলে তিনি জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন, নাটোর ও সিংড়া শহরে করোনা পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় শুধু মানুষের জীবিকার দিকে তাকালে হবে না, জীবনের দিকেও খেয়াল করতে হবে। তাই মানুষকে বাঁচানোর স্বার্থে লকডাউনের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে যে শহরগুলোয় ইতিমধ্যে করোনা সংক্রমণ অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে, সেসব শহর লকডাউন করতে হবে। একই সঙ্গে এসব এলাকার মানুষের খাদ্যসংকট নিরসনে উদ্যোগী হতে হবে। একটি মানুষও যেন না খেয়ে থাকে, সে ব্যাপারে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সজাগ থাকতে হবে। নাটোর-৪ আসনের সাংসদ আবদুল কুদ্দুস, নাটোর-২ আসনের সাংসদ শফিকুল ইসলাম ও নাটোর-১ আসনের সাংসদ শহিদুল ইসলাম করোনা মোকাবিলায় প্রশাসনকে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহা বলেন, প্রস্তুতির জন্য আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে পুলিশকে নাটোর ও সিংড়া শহরের প্রবেশপথগুলোয় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মাইকিং করে জনসাধারণকে সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়টি বোঝানো হবে।
জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া একটি মানুষকেও ঘরের বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানান। সর্বাত্মক লকডাউন কার্যকর করতে এবং অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আজ সকাল থেকে প্রশাসনের লোকজন কাজ শুরু করেছেন।