জেলা প্রতিনিধি:
করোনার সময় বেকারত্ব দূরীকরণে সমন্বিত খামার করেছেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার বামনী এলাকার দুই ভাই মো. বাছির ভূঁইয়া ও বায়েজীদ ভূঁইয়া। এতে বছর ঘুরতেই তারা পেয়েছেন সফলতা। সমন্বিত খামারের এ উদ্যোগে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের পাশাপাশি বেকারত্ব দূরীকরণেও ভূমিকা রাখছেন দুই ভাই। তারা এখন সামাজিকভাবে সফল। দুই ভাইয়ের সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়েছেন স্থানীয় অনেক যুবক।
জানা গেছে, নিজেদের ১৩ একর জমিতে গত বছরের মাঝামাঝি একটি সমন্বিত খামার গড়ে তোলেন দুই ভাই। খামারে একই সঙ্গে কৃষি, গো-খামার ও মাছ চাষ করেন। খামারের আঙ্গিনা ও পুকুরপাড়ে লাগিয়েছেন পেঁপে, লেবু, পেয়ারাসহ নানা জাতের ফলগাছ। পাশাপাশি পরিকল্পিতভাবে চলছে গরু ও ছাগল পালন।
ডাইনেস্কো এগ্রো ফার্ম নামে খামারটি অল্প সময়ের মধ্যেই লাভজনক হয়ে উঠে। তাদের সফলতা অন্যদেরও উৎসাহিত করেছে। খামার গড়তে এরই মধ্যে দুই ভাইয়ের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে আসছেন পাশ্ববর্তী এলাকার যুবকরা।
সফল সহোদর বাছির ভূঁইয়া ও বায়েজিদ ভূঁইয়া জানান, শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েই তারা সমন্বিত খামার করার উদ্যেগ নেন। করোনার সময় বেকারত্ব দূরীকরণে নিজেরাই খামার গড়ে তোলেন। ৩০ লাখ টাকা পুঁজিতে শুরু হওয়া এ খামার থেকে দ্বিগুণ লাভ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে অনেক হতদরিদ্র ও বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে।
দুই ভাই আরো জানান, গত বছর এ খামারে ২০টি গরু, ১৫টি ছাগল, ২টি পুকুরে মাছ ও বাকি জমিতে ফল-শাকসবজি চাষ করেন তারা। এখন খামারে গরু-ছাগলের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। পুকুরে অ্যাকুরিয়াম মাছ, রুই, কাতল, মৃগেল, কালিবাউশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে। গাছপালা ও অন্যান্য সম্পদ দেখাশোনায় নিয়োজিত আছে ২০ জন শ্রমিক।
ডাইনেস্কো এগ্রো ফার্মের শ্রমিকরা জানান, করোনায় কাজ হারিয়ে তারা বেকার হয়ে পড়েন। দিনদিন আর্থিক ও পারিবারিক অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। নিজ এলাকায় সমন্বিত খামার গড়ে ওঠায় তাদের বেকারত্ব অনেকটাই দূর হয়েছে। এখন তারা পরিবার নিয়ে সুখেই আছেন।
স্থানীয় আনোয়ার হোসেন বলেন, ডাইনেস্কো এগ্রো ফার্মের সফলতা দেখে আমিও ক্ষুদ্র পরিসরে খামার করি। পাশ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার বেকার যুবকরাও সমন্বিত খামার গড়ে তুলছে। কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা ও পরামর্শ পেলে তরুণ উদ্যোক্তারা সফল হবে। এতে দেশে বেকারের সংখ্যা কমে আসবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন জানান, দুই ভাইয়ের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। এ সমন্বিত খামার আরো যুবককে উৎসাহ দেবে। কৃষি বিভাগ থেকে তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।
বিএসডি / আইকে