ইসরায়েলে বিরোধী দলগুলোর জোটের সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে কি না, তার ওপর আজ রোববার পার্লামেন্টে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।পার্লামেন্টে অনুষ্ঠেয় ভোটে নতুন সরকার অনুমোদন পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আজ বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ইসরায়েলের পার্লামেন্টের আজকের ভোটকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাগ্যনির্ধারণী ভোট হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। আস্থা ভোটে জোট যদি ১২০ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে সক্ষম হয়, তাহলে নেতানিয়াহুর এক যুগের শাসনের অবসান ঘটবে। অন্যদিকে, আটদলীয় জোট যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ব্যর্থ হয়, তাহলে নতুন করে নির্বাচন হবে। অর্থাৎ, ইসরায়েলে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দীর্ঘ শাসনের অবসান ঘটছে কি না, তা আজ জানা যাবে।
এক দশকের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের রাজনীতিতে ডানপন্থী আধিপত্য ধরে রেখেছেন নেতানিয়াহু। ক্ষমতায় টিকে থাকতে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা ও আগ্রাসন চালানোর পথ বেছে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। গত মাসেও ফিলিস্তিনের গাজায় টানা ১১ দিন বিমান থেকে বোমা ছুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
তবে এরপরও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে গ্রহণযোগ্যতা ফিরে পাননি নেতানিয়াহু। তাঁকে হটাতে জোট বেঁধেছে বাম, ডান ও মধ্যপন্থী দলগুলো।
নেতানিয়াহুর একসময়ের ঘনিষ্ঠজন ও তাঁর সরকারে কয়েক দফায় মন্ত্রিত্ব করা নাফতালি বেনেত মধ্যপন্থী দল ইয়েস আতিদের সঙ্গে জোট গড়তে রাজি হওয়ায় গত সপ্তাহে নেতানিয়াহুর বিদায়ের ঘণ্টাধ্বনি বাজতে শুরু করে।
এখন এই জোট পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারলে ইসরায়েলের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন ইয়েমিনা পার্টির নেতা নাফতালি বেনেত। পার্লামেন্টে বেনেতের দলের মাত্র ছয়টি আসন থাকলেও গত মার্চে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পাওয়া দল ইয়েস আতিদের সরকার গঠনের জন্য তাঁর সমর্থন জরুরি হয়ে পড়েছিল। ইয়েস আতিদের নেতা ইয়ার লাপিদের সঙ্গে বেনেতের যে চুক্তি হয়েছে, তাতে চার বছর মেয়াদের এই সরকারে প্রথম দুই বছর প্রধানমন্ত্রী হবেন বেনেত। তারপরের দুই বছর প্রধানমন্ত্রী হবেন লাপিদ।
পার্লামেন্টে জোটের সামান্য ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে বলে জানাচ্ছে বিবিসি। ফলে, সব ঠিক থাকলে এই জোট পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে যাচ্ছে।
জোট যাতে সরকার গঠন করতে না পারে, সে জন্য সব চেষ্টাই চালিয়ে আসছেন নেতানিয়াহু। জোটকে ইসরায়েলের জন্য বিপজ্জনক হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।
পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিয়ে জোট সরকার গঠিত হলে নেতানিয়াহু হবেন বিরোধী দলের নেতা। বিরোধী দলে গেলেও দ্রুতই জোট সরকারের পতন ঘটাবেন বলে আগেই হুমকি দিয়ে রেখেছেন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা আছে। তিনি বিরোধী দলে গেলে এ মামলা গতি পেতে পারে।