খেলাধূলা প্রতিনিধি:
ডারবান টেস্টের দ্বিতীয়দিনটা বাংলাদেশের হতে পারত। কিন্তু মুমিনুলদের একজোড়া শেষের আক্ষেপে সিরিজের প্রথম টেস্টের লাগাম চলে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে।
দিনের শুরুতে কাল খালেদ আহমেদের দারুণ বোলিংয়ে প্রোটিয়াদের তিনশ রানের মধ্যে বেঁধে ফেলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষ দুই উইকেটে ৬৯ রান যোগ করে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস থামে ৩৬৭ রানে।
জবাবে এক উইকেটে ৮০ রান তুলে ফেলা বাংলাদেশ শেষ বিকালে সাইমন হারমারের স্পিনে নাকাল হয়ে পড়েছে মহাবিপদে। চার উইকেটে ৯৮ রানে দ্বিতীয়দিন শেষ করেছে সফরকারীরা। এখনো ২৬৯ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
প্রায় সাড়ে ছয় বছর পর টেস্ট খেলতে নামা হারমার ব্যাট হাতে অপরাজিত ৩৮ রানের পর আসল ভেলকি দেখান বোলিংয়ে। ৪২ রানে চার উইকেট নিয়ে এই অফ-স্পিনারই কাঁপিয়ে দেন বাংলাদেশকে।
সাদমান ইসলামকে নয় রানে বোল্ড করে প্রথম আঘাত হানেন হারমার। ২৫ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর দারুণ ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৫ রান যোগ করে আশার আলো দেখিয়েছিলেন মাহমুদুল হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু শেষ বিকালে ফের রুদ্ররূপে হাজির হন হারমার। ৮৭ বলে ৩৮ রান করা নাজমুলকে অসাধারণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে জুটি ভাঙার পর অধিনায়ক মুমিনুল হককে শূন্য রানে ফেরান তিনি।
হারমারের চতুর্থ শিকার মুশফিকুর রহিম (সাত)। একবার রিভিউ নিয়ে বাঁচা মুশফিককে রিভিউ নিয়েই ফেরান দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং হিরো। দিনের শেষ তিন ওভার নাইট ওয়াচম্যান তাসকিন আহমেদকে নিয়ে কোনোমতে কাটিয়ে দেন মাহমুদুল। একপ্রান্ত আগলে রেখে দিন শেষে তিনি ৪৪ রানে অপরাজিত। খেলেছেন ১৪১ বল।
প্রথমদিনের প্রথম সেশনে উইকেটখরায় ভোগা বাংলাদেশ দ্বিতীয়দিনের প্রথম সেশন নিজেদের করে নেয় চার উইকেট তুলে নিয়ে। সকালের সেশনে ৮৩তম ওভারে পরপর দুই বলে দুটি উইকেট নেন খালেদ আহমেদ। কাইল ভেরেইনে (২৮) ও উইয়ান মুলডার (০) তার দুই শিকার।
দ্বিতীয় সেশনেও দুই বলে দুই উইকেট পায় বাংলাদেশ। তবে এবার দুজন দুটি উইকেট নেন। এরমধ্যে ৫৩ রানে দ্বিতীয়দিন শুরু করা বাভুমার উইকেট মহামূল্যবান। ৯৮তম ওভারের শেষ বলে তাকে বোল্ড করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। নড়বড়ে নব্বইয়ের শিকার বাভুমার সেঞ্চুরির অপেক্ষা এতে আরও বাড়ে।
১৯০ বলে ১২টি চারের সহায়তায় ৯৩ রানে আউট হওয়া এই প্রোটিয়া ব্যাটার শেষবার টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন ছয় বছর আগে, কেপটাউনে। বাভুমা বোল্ড হওয়ার পর ৯৯তম ওভারের প্রথম বলে মহারাজকেও (১৯) বোল্ড করেন ইবাদত। বাভুমার আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে সপ্তম উইকেটে মহারাজের সঙ্গে তার ৫৩ রানের জুটি ভাঙে। দক্ষিণ আফ্রিকা তখন ২৯৮/৭।
সেখান থেকে স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংস ৩৬৭ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব লেজের দুই ব্যাটার সাইমন হারমার ও ডুয়ানে অলিভিয়েরের (১২)। শেষ দুই উইকেটে ৬৯ রান যোগ করে স্বাগতিকরা। অলিভিয়েরকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে শেষ জুটি ভাঙেন মিরাজ। জুটিতে ৩৫ রান যোগ করেন দুজন।
হারমার নিজের ষষ্ঠ টেস্টে চারটি চার ও একটি ছয়ে ৭৩ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন। সকালের সেশনে চার উইকেট নেওয়া বাংলাদেশের বোলাররা ২৩৩/৪-এ দ্বিতীয়দিন শুরু করা দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৯৮/৮-এ পরিণত করেন। নিজের চতুর্থ টেস্টে চার উইকেট নেন পেসার খালেদ আহমেদ। মিরাজ তিনটি ও ইবাদত দুটি উইকেট পান। এই প্রথম নিজেদের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে এক ইনিংসে ৪০০-র কম রান করল দক্ষিণ আফ্রিকা।
বিএসডি/ এমআর