নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফেনীতে অবস্থান করছে দেশের প্রথম ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর।
শুক্রবার রাতে ফেনী রেল স্টেশনে পৌঁছায় ট্রেনটি।
থাকবে ১৫ আগস্ট বিকেল পর্যন্ত।
ফেনী রেল স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হারুন বলেন প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা এবং বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত এটি উন্মুক্ত থাকবে। যে কেউ ইচ্ছা করলে জাদুঘরটি ঘুরে দেখতে পারবেন।
তিনি জানান, আগস্টের ১ তারিখ চট্টগ্রাম থেকে রেল জাদুঘরটির উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী ড.হাসান মাহমুদ। উদ্বোধনের পর থেকে ব্যাপক সাড়া মিলেছে জাদুঘরটিকে ঘিরে। সর্বস্তরের মানুষের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ট্রেনটির মিটার গেজ শুরু হয় চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে।
সেখানে ১ আগস্ট থেকে ৫ আগস্ট অবস্থান করে ৬ আগস্ট ভাটিয়ারি রেল স্টেশনে চলে যায় সেখানে দুই দিন, সীতাকুণ্ডে ৯ আগস্ট পর্যন্ত দুই দিন এরপর মিরসরাই উপজেলার চিনকি আস্তানা রেল স্টেশনে ১১ আগস্ট পর্যন্ত দুই দিন অবস্থান করে। এরপর ফেনী রেল স্টেশনে পৌঁছায়।
শ্রেণির মানুষ এটি দেখতে আসেন। জাদুঘরটি বঙ্গবন্ধুকে ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে জানার সুযোগ করে দিয়েছে।
জানা যায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ, অধিকার আদায়ে আন্দোলন, সংগ্রাম এবং তার অসামান্য কর্মজীবন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এই ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বাংলাদেশে এই ধরনের উদ্যোগের মধ্যে এটিই প্রথম।
নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ জাদুঘর ঘুরে দেখছেন। এই জাদুঘরে ১৯২০ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ১২টি গ্যালারির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। কোচের এক প্রান্তে রাখা একটি বড় এলইডিতে রাখা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য ও ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। অর্থাৎ প্রতিটি গ্যালারিতে ডিসপ্লের পাশাপাশি ধারা বর্ণনা দেওয়া হচ্ছে। ভিডিওচিত্রের সঙ্গে ধারা বর্ণনা শুনে নতুন প্রজন্ম ইতিহাস জানার সুযোগ পাচ্ছে।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জাদুঘরটিতে আরও রাখা হয়েছে জয়বাংলা শ্লোগানের আদলে তৈরি করা একটি বুক শেলফ। বইগুলোর মধ্যে শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধুর রচিত বিভিন্ন শিশুতোষ বই। ‘যাদু মনি’ সম্বোধন করে মেয়ে হাসুকে নিয়ে লেখা বঙ্গবন্ধুর চিঠিসহ ৬টি চিঠি রাখা হয়েছে। দর্শকদের নজর কাড়ার জন্য ভেতরেই তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম ফুলের বাগান। আরও রয়েছে জাতির পিতার ব্যবহৃত পোশাক ও জিনিসপত্রের প্রতিকৃতি। রয়েছে বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থল, স্মৃতিসৌধ, তাঁর হাতে লেখা চিঠি।
ফেনী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী ফেনী রেল স্টেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে তিনি জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত সব ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার অসাধারণ মাধ্যম এই জাদুঘর।
শুক্রবার আবদুল তালেব চৌধুরী রনি নামের এক যুবক জাদুঘরটি দেখতে এসে বলেন, আমাদের বাড়ির পাশে এভাবে বঙ্গবন্ধুর ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর দেখতে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।
জাদুঘরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রুবেল শেখ জানান, এটি উদ্বোধনের পর থেকে আমি নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছি। সর্বস্তরের জনগণের মাঝে ব্যাপক সাড়া মিলেছে জাদুঘরকে ঘিরে।
ফেনী রেল স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হারুন বলেন, চিনকি আস্তানা থেকে রেল স্টেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটি বৃহস্পতিবার রাত দশ টার দিকে ফেনী পৌঁছে। শুক্রবার সকাল ১০ টা থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, জাদুঘরটি আমি নিজেও দেখেছি। ১৯২০ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনে ঘটে যাওয়া সব বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে জাদুঘরে। এটি বাংলাদেশ রেলওয়ের অনন্য উদ্যোগ।
বিএসডি/ফয়সাল