সুমাইয়া হাসান সিদ্দিকী: ‘দি ব্রেভ গার্লস’ গত ২৫ নভেম্বর থেকে জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতার মাত্রা হ্রাসের উদ্দেশ্যে “সিক্সটিন ডেইস অ্যাক্টিভিজম: লেটস স্পিক আপ” ক্যাম্পিং করে আসছে। ক্যাম্পেইনের এর কর্মসূচিতে থাকবে; স্টোরি টেলিং সেশন, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, বিশেষ আলোচনা সিরিজ। বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সভার দ্বিতীয় পর্ব- ‘ফ্রিডম কান্ট বি এক্সক্লুসিভ’ শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) রাত ৯টায় জুম ভিডিও কনফারেন্স প্ল্যাটফর্ম এবং ফেইসবুক লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চিত্রশিল্পী এবং ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাতা আয়েশা সিদ্দিকা এবং বর্ষসেরা স্বর্ণকিশোরী ২০১৬ এর বিজয়ী দীপ্তি চৌধুরী। ‘সিক্সটিন ডেইজ অ্যাক্টিভিজম: লেটস স্পিক আপ’ ক্যাম্পেইনের আলোচনা সভার দ্বিতীয় পর্বের বিষয়বস্তু ছিল নারীদের বাস্তব এবং ডিজিটাল জগতে অবাধ স্বাধীনতার সহিত নিজেদের স্বক্ষমতা ও কর্মদক্ষতার বিকাশ ঘটানো। ডিজিটাল ওয়ার্লডে ঘটে যাওয়া নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে আওয়াজ তোলার ব্যাপারে অনুপ্রেরনার বৃদ্ধি ঘটানো।
আলোচনার অন্যতম লক্ষ্য ছিল সমাজের বৈষম্যপূর্ন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা; যেখানে “স্বাধীনতা” নামক প্রত্যয়কে একটি নির্দিষ্ট লিঙ্গের জন্য, তথা ছেলেদের জন্য বরাদ্দ করার সংস্কৃতি চর্চিত হয়ে আসছে। প্রতিটি ছেলের এবং মেয়ের জন্মগতভাবেই সমান অধিকার এবং স্বাধীনতা রয়েছে তার নিজের জীবনের নানা বিষয়ে নির্ভয়ে সিদ্ধান্ত নেবার। সে বিষয়টি; বিয়ে হোক, পড়াশোনা হোক কিংবা অন্য যে কোনো বিষয়ই হোক না কেন, সব জেন্ডারেরই সমান স্বাধীনতা থাকা উচিত।
এ প্রসঙ্গে আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘পড়াশোনা করতে চাই, না বিয়ে করতে চাই, নাকি পড়াশোনা শেষ করে বিয়ে করতে চাই, নাকি পড়াশোনার মাঝে বিয়ে করতে চাই; এ ধরনের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়া প্রতিটি মেয়ের স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা সামাজিকভাবে প্রতিটি মেয়ের জন্য হওয়াটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, নারীরা যেন কোনদিন দমে না থাকে এবং এখন সময় এসেছে নারীরা নিজেদের জন্যে নিজেরাই আওয়াজ তুলবে। নারীদের নিজেদের অধিকারের জন্য কথা বলার মধ্য দিয়েই নারীদের সফলতা এবং সুষ্ঠ অগ্রগতি নিশ্চিতকরন সম্ভব।
দীপ্তি চৌধুরী বলেন, “তার এবং তার সাথে যারা কাজ করছে সকলের উদ্দেশ্য হলো, পুরো বাংলাদেশের সকল কিশোর-কিশোরীদেরকে একটি সুতোয় বাঁধা; যেন যেকোনো প্রয়োজনে সকলে সকলের সাহায্যে এগিয়ে আসে এবং একসাথেবাংলাদেশর উন্নয়ন ঘটাতে পারে।” তিনি আরো বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ সোনার বাংলাদেশ হোক, বাংলাদেশে যেন কোনো বাল্যবিবাহ ঘটুক। বাংলাদেশের প্রতিটি কিশোর-কিশোরী প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে অবগত হোক। আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে, একসাথে কাজ না করলে আমরা আমাদের সকলের স্বাধীনতা এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারবোনা।‘
মত প্রকাশের এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা, জীবনে নিজের পেশা বেছে নেবার স্বাধীনতা সকল জেন্ডারের মানুষেরই রয়েছে। শুধু ছেলেরা এমন ‘স্বাধীনতা পাবে নিজেদেরর জীবনে’ এটি কোন সংবিধানে নেই। একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে উভয়ের জন্যেই সংবিধানে সমান অধিকার এবং সমান স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। তাই জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা রোধে ‘দি ব্রেভ গার্লস’ সমাজে এবিষয়ক নানা সচেতনতামূলক বার্তা পৌছে দেবার উদ্দ্যেশে নিরন্তন কাজ করে যাচ্ছে।