আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জালাল উদ্দীন বলেন, লাশ গ্রহণের সময় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের বুকফাটা আর্তনাদে থানা চত্বরের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। প্রিয়জনের বীভৎস লাশ দেখে মূর্ছা যান স্বজনেরা। লাশ হস্তান্তরের পর থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কোমলদোগাছি গ্রামে অগ্নিকাণ্ডে মারা যাওয়া শিহাবের বাড়ির পাশে যেতেই শোনা যায় আহাজারি। বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শিহাবের মা সোনাভান বেগম ছেলের লাশের পাশে বসে চিৎকার করে কাঁদছেন। সোনাভান চাতালশ্রমিক। চার ভাইবোনের মধ্যে শিহাব তৃতীয়, বোনটির বয়স সাত-আট বছর। চার ভাইবোনের মধ্যে একমাত্র শিহাব ছাড়া সবাই শারীরিক প্রতিবন্ধী। অভাবের সংসারে বাবাকে আর্থিক সাহায্য করার জন্য ওই কারখানায় কাজ নিয়েছিল শিহাব। আগুনে পুড়ে সব শেষ হয়ে গেছে তার।
আজ দুপুরে মুঠোফোনে বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অগ্নিকাণ্ডে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারকে এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা দেওয়া হয়নি। তবে কেউ আবেদন করলে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
নিহত ব্যক্তিদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কারখানার মালিকের পক্ষ থেকে প্রতিটি পরিবারকে ১০ হাজার টাকা সহায়তা করা হয়েছে। তবে সরকারিভাবে তারা কোনো সাহায্য পায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌরসভার হেমতখালী এলাকায় বিআইআরএস নামের একটি প্লাস্টিকের থালা নির্মাণ কারখানায় আগুন লাগে। দ্রুত আগুন ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়লে কারখানার পাঁচ শ্রমিক আটকা পড়েন। পরে আগুনে পুড়ে তাঁদের মৃত্যু হয়। আগুনে পুড়ে তাঁদের চেহারা এত বিকৃত ছিল যে তাৎক্ষণিকভাবে দেখে চেনার উপায় ছিল না। খবর পেয়ে বগুড়া ও নওগাঁ ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিএসডি/ এলএল