নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে দুই শতাধিক জেলেসহ ২১টি মাছধরা ট্রলার ডুবে যওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ১১ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে দুবলারচরের পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে এ ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে প্রবল বর্ষণে দুবলার পাঁচটি চরের প্রায় আড়াই কোটি টাকার শুঁটকি নষ্ট হয়ে গেছে বলে বন বিভাগ জানিয়েছে। ডুবে যাওয়া ট্রলার ও নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কোস্টগার্ডের একটি জাহাজ, বন বিভাগের একাধিক জলযান এবং অর্ধশতাধিক ফিশিং বোটসহ নিখোঁজদের উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে।
দুবলার আলোরকোল জেলে পল্লির রামপাল বেল্টের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের শেখ জানান, রাতে আকস্মিকভাবে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। এ সময় আলোরকোলের পশ্চিম সাগরে মাছ ধরারত শতাধিক ট্রলারের মধ্যে ১৮টি ট্রলার আকস্মিকভাবে সাগরে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া ট্রলারের ১৫৪ জেলে অপর ট্রলারে উঠে আসতে পারলেও তিন জেলে এখনো নিখোঁজ হয়। শনিবার সকালে কোস্টগার্ড, বনবিভাগ ও জেলেরা মিলে ওই তিন জেলেকে উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়া জেলেরা হচ্ছেন- বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গিলাতলা গ্রামের মো. শাহিন, বকুলতলা গ্রামের মফিজুল ও ইসলামাবাদ গ্রামের মো. মোদাচ্ছির।
বাগেরহাট মৎস্য আড়তদার সমিতির সহ-সভাপতি আ. মান্নান ব্যাপারী জানান, সাগরে আরো তিনটি ফিশিং ট্রলার ডুবে গেছে। এর মধ্যে বঙ্গোপসাগরের শেলারচরের আইলে মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষখালির হারুন মুন্সীর এফবি জামিলা, বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার বগা গ্রামের আনিচ মিয়ার এফবি মায়ের দোয়া ও একই এলাকার মো. ইলিয়াস মিয়ার মাবাবার দোয়ার ৫০ জন জেলেসহ ফিসিং ট্রলার ডুবে যায়। এ সময় আলমগীর সর্দারসহ আট জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। সকালে ট্রলার ওই তিনটি অন্যান্য জেলেরা উদ্ধার করে অপর একটি ট্রলারে করে টেনে বনবিভাগের দুবলা অফিস সংলগ্ন ভেদাখালি খালে নিয়ে এসেছে বলে বন বিভাগ জানিয়েছে।
অপরদিকে জেলেপল্লি মাঝেরকিল্লার বহাদ্দার জাহিদ হোসেন জানান, ঝড়ে তাদের মাছ শুকানোর মাচা ও জেলেদের অস্থায়ী ঘর ভেঙে গেছে। প্রবল বর্ষণে চরগুলির শুঁটকি পল্লির কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
বন বিভাগের দুবলা জেলে পল্লি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রহল্লাদ চন্দ্র রায় জানান, বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে দুবলারচরের আলোরকোলের সাগরে দুই শতাধিক জেলেসহ ২১টি ট্রলার ডুবির ঘটনায় তিন জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ জেলে ও ট্রলার উদ্ধারে কোস্টগার্ডেরে সহায়তা নিয়ে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়া অবিরাম বর্ষণে দুবলার আওতাধীন আলোরকোল, মেহেরআলী, মাঝেরকিল্লা, নাড়িকেলবাড়িয়া ও শেলার চরের জেলে পল্লির প্রায় আড়াই কোটি টাকার শুঁটকি নষ্ট হয়েছে বলে তিনি জানান।