পর্যটন ডেস্ক,
বাংলাদেশের শেষ বাড়িতে দাঁড়িয়ে আছি। আমার সামনেই মেঘালয় রাজ্যের মনোমুগ্ধকর অসংখ্য পাহাড়। জোরে চিৎকার করলে সে আওয়াজ ফেরত আসবে, এমন দূরত্বে দাঁড়িয়ে হা করে তাকিয়ে আছি আমি। পাহাড়ের বুক চিরে নেমে যাচ্ছে সফেদ ঝরনা। ভালো করে কান পাতলে ঝরনার মৃদু গর্জনও শোনা যাচ্ছে।
সবুজের খোঁজে এদিক-ওদিক যাওয়া হয় সবসময়। বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘাঁটাঘাটি করে এ দরজা-জানালাহীন ঘরটির সন্ধান পেলাম। বাংলাদেশের শেষ গ্রাম বলে নয়, সবুজের মাঝে এক চিলতে মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজতে এসেছি এখানে। পথে পথেই কত মায়া লুকিয়ে আছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে একটা কথা বলে রাখি, দেশের শেষ বাড়ি বলতে কিছু নাই, সবকিছুই আপেক্ষিক। খুঁজলে এমন ‘শেষ’ বাড়ি আরো হাজারখানেক পাওয়া যাবে। পার্থক্য হচ্ছে, এ বাড়ির সাইনবোর্ডে লেখা আছে ‘বাংলাদেশ লাস্ট হাউজ’।
জাফলং থেকে বাসে চড়ে বসলাম। গন্তব্য জৈন্তা হিল রিসোর্ট। জৈন্তাপুর উপজেলার আলু বাগান নামক স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে এ রিসোর্ট। সেখানে গেলেই সন্ধান পাওয়া যাবে আপেক্ষিক বাড়িটির। বাস আমাদের রিসোর্টের সামনেই নামিয়ে দিলো। টিকেট কেটে ভেতরে ঢুকেই হাতে পেলাম এক কাপ গরম চা। একটু আগেই বৃষ্টি হয়েছে, এমন সময়ে এ চা-টা বেশ দরকার ছিল।
চায়ের মগ হাতে নিয়ে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালাম। আহা ওই তো দেখা যাচ্ছে জৈন্তা পাহাড়। যেখানে আকাশ হেলান দিয়ে পাহাড়ের কোলে ঘুমায়। কালো মেঘরাজি এখনো পিছু ছাড়েনি। পাহাড়ের কোলজুড়ে কুয়াশার বিছানা। আমি ধুমায়িত চায়ের মগে হাতে উম ফিরে পেলাম আর প্রকৃতি আমার হৃদয়ে শীতল স্পর্শ দিয়ে গেল।
রিসোর্টের আশপাশটাও খুবই পরিপাটি। গরু ঘাস খাচ্ছে, পাখিরা উড়ে যাচ্ছে। দূরের একটি গাছ বেশ নজর কাড়লো। সেখানে অনেকগুলো সাইনবোর্ড। কী লেখা, কৌতুহল নিয়ে ছুটে গেলাম। বাহ বেশ নান্দনিক জিরো পয়েন্ট। সাইনবোর্ডগুলো নির্দেশ করছে নেপাল, শিলং গোহাটি ও ভুটানের কথা। এসব স্মৃতি নিয়েই ফের ফিরে আসা। আফসোস, রাত কাটানো হলো না। তবে একদিন ঠিকই রাত কাটাবো।
বিএসডি/আইপি