কিশোরগঞ্জ পৌর শহরে গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাতে কিশোরগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আশফাককে ধরতে তার বাসায় যায় পুলিশ। এসময় তাকে বাসায় পাওয়া যায়নি।
তখন বাসায় ছিলেন আশফাকের স্ত্রী ঝর্ণা ইসলাম নাজমা ও দুই যমজ ছেলে শহীদুল ইসলাম অনিক ও মাকসুদুল ইসলাম আবির। পুলিশ আশফাককে না পেয়ে তার দুই যমজ ছেলেকে ধরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পরিবারের। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে জানাজানি হয়েছে।
আশফাকের স্ত্রী নাজমা ইসলাম বলেন, মাকসুদুল ইসলাম আবির অনার্সে পড়েন, আর শহীদুল ইসলাম অনিক এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। আমার এই দুই ছেলে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। বাসায় পুলিশ আসে তাদের বাবাকে ধরতে, তাকে না পেয়ে আবির আর অনিককে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।
বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীল অবস্থার কারণে স্বামী আর এক ছেলে পলাতক রয়েছে। আমার দুই ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। আমি এখন বাসায় একা। সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকি, কখন কি হয়। এখন স্বাভাবিক জীবনযাপন করাও কষ্টকর।
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর শনিবার ঢাকায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের হামলা, গুলি বর্ষণ এবং অসংখ্য নেতাকর্মীকে আটক ও আহত করার প্রতিবাদে পরের দিন রোববার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে বিএনপি। এরপর থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের অভিযান চালায় পুলিশ।
কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন বলেন, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা তারা প্রতিনিয়ত ঘটিয়ে চলছে। এর আগে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ নেভিনকে না পেয়ে তার ছোট ভাই এবং তার বৃদ্ধ বাবাকে গ্রেফতার করেছে। ওই দিন আমাদের পাকুন্দিয়ার যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ককে গ্রেপ্তার করার পর তার শালা, ভাতিজাকেও গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের হয়রানি নির্যাতনের হাত থেকে এখন পরিবারের সদস্যরাও রক্ষা পাচ্ছে না। দেশকে এখন পুলিশি রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করছে। অবিলম্বে এই গ্রেপ্তার হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, হরতাল ও অবরোধের সময় হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আমিনুল ইসলাম আশফাকের দুই ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিএসডি / এলএম