বর্তমান সময় ডেস্ক
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে লাল-সবুজ বাতির আলোয় বদলে গেছে রংপুর। দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জায় রংপুরের চিরচেনা স্থাপনাগুলো হয়ে উঠেছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। রাতের অন্য রকম রংপুর দেখতে বেড়েছে সাধারণ মানুষসহ দর্শনার্থীদের আনাগোনা।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত রংপুর মহানগরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এমন নজরকাড়া আলোকসজ্জা দেখা যায়। নগরের বাইরে জেলার বিভিন্ন উপজেলায়ও মহান বিজয় দিবসের আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
বিশেষ করে সরকারি, আধা সরকারি স্থাপনাসহ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ঘিরে আলোময় হয়েছে পুরো রংপুর জেলা। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়, নগর ভবন, টাউন হল, জেলা পরিষদ ভবন, কালেক্টরেট সুরভি উদ্যান, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ চত্বর ও ভাস্কর্য দর্শনার্থীদের কাছে টানছে। বিজয়ের ৫০ বছরের আলোয় আলোকিত হতে বাদ পড়েনি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান ও বাণিজ্যিক ভবনগুলো।
সরেজমিনে রাত সাড়ে ১০টায় রংপুর জেলা পরিষদ চত্বরে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সের মানুষদের। যাদের বেশির ভাগই রাতের লাল-সবুজ আলোকসজ্জায় আকৃষ্ট হয়ে এসেছেন বলে জানান। দর্শনার্থীদের অনেককেই মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ, সেলফি ও ছবি তুলতে দেখা যায়।
আহসান হাবিব ও কামরুল হাসান নামে দুই দর্শনার্থী বলেন, রংপুর জেলা পরিষদ ভবনটি আজ আমাদের কাছে অন্য রকম মনে হচ্ছে। এর আগে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে এসেছিলাম। আজ আবার এসেছি। ভীষণ ভালো লাগছে এত সুন্দর আলোকসজ্জা দেখে। পুরো শহরটাই আজ সত্যি চোখজুড়ানোর মতো।
রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে কথা হয় গোলাম মোস্তফা জয় নামের এক সংবাদকর্মীর সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিজয়ের ৫০ বছরে আমাদের অনেক বড় বড় অর্জন রয়েছে। আমাদের দেশ এখন অনেক উন্নত। আমরা দিন দিন উন্নয়নের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছি। আজ রংপুর আলোকিত, সারাদেশ আলোকিত। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের ক্ষণে রংপুরকে অন্য রকম লাগছে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, মডার্ন অর্জন মোড়, মাহিগঞ্জ সাতমাথা, শাপলা চত্বর, পায়রা চত্বর, মেডিকেল মোড় শহীদ মুখতার ইলাহী চত্বর, চেকপোস্ট মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয় লাল-সবুজ আলোয় বিজয় উদযাপন।
এদিকে শুধু রংপুর মহানগরেই নয়, জেলার আট উপজেলাও সেজেছে আলোকসজ্জায় রঙিন বাতিতে। আলোকিত হয়েছে সরকারি ভবনগুলো। তবে রংপুর জেলা পরিষদ ভবন, সুরভি উদ্যানে নবনির্মিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী স্মারকটি প্রশংসনীয় বলেও জানিয়েছে অনেকেই।
রংপুর প্রেসক্লাবের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মোস্তফা সরওয়ার অনু বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জনগুলোর মধ্যে বাঙালি জাতির জন্য এদিনটি স্মরণীয় ও শ্রেষ্ঠ অর্জন। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আজ লাল-সবুজের ভালোবাসায় রঙিন হয়ে ওঠা রংপুর নিয়ে গর্ববোধ করছি। বিশেষ করে দর্শনীয় আলোকসজ্জা আমার মন কেড়েছে।
আলোকসজ্জার বিষয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, সারাদেশের মতো রংপুরেও গুরুত্বসহকারে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, চত্বর, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল এবং বিভিন্ন স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হয়েছে। অবিস্মরণীয় এই বিজয়ের ৫০ বছরটি আলোয় আলোকিত করে উদযাপন করতে চেষ্টা করেছি।
এসএ