আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের চেন্নাই প্রদেশে জন্মগ্রহণ করা ব্রিটিশ নাগরিক শঙ্কর বালসুব্রহ্মণ্যমকে এ বছর ৩০ লাখ ডলার মূল্যের ‘ব্রেকথ্রু পুরস্কার’ দেওয়া হয়েছে। ডিএনএ-র জটিল রহস্য অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ভেদ করার উপায় দেখিয়ে তিনি বিজ্ঞানের ‘অস্কার’ খ্যাত এবার পুরস্কার জিতেছেন। আজ শুক্রবার আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞানের গবেষণায় রসায়নবিদ শঙ্করের পাওয়া শীর্ষস্তরের এই স্বীকৃতি রুশ বিজ্ঞানী ও ধনকুবের ইউরি মিলনার, সের্গেই ব্রিন ও ফেসবুক প্রধান মার্ক জুকারবার্গের সংস্থার দেওয়া ‘ব্রেকথ্রু পুরস্কার’ অর্থমূল্যে নোবেল পুরস্কারের চেয়েও দামি। তাই একে বিজ্ঞানের ‘অস্কার’ বলা হয়ে থাকে। বৃহস্পতিবার এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী গণিত ও জীববিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে আরও পাঁচ জনকে। শঙ্করই তাদের মধ্যে একমাত্র ভারতীয় বংশোদ্ভূত। পদার্থবিজ্ঞানে অবদানের জন্য ২০১২ সালে প্রথম ভারতীয় হিসেবে এই ব্রেকথ্রু পুরস্কার পেয়েছিলেন অধ্যাপক অশোক সেন।
শঙ্করের সঙ্গে যৌথভাবে এই পুরস্কার জিতেছেন ব্রিটিশ রসায়নবিদ ডেভিড ক্লেনারম্যান। দুজনেই কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। পুরস্কারের বাকি অংশ পেয়েছেন ফরাসি সংস্থা ‘আলফানোসোস’ এর কর্ণধার পাসকাল মায়ার। তাদের উদ্ভাবন আগামী প্রজন্মে মানুষের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের প্রধান প্রযুক্তি হবে বলে ধারণা।
শঙ্করের জন্ম ১৯৬৬ সালে চেন্নাইয়ে। জন্মের দুই বছরের মাথায় শঙ্করকে নিয়ে তার বাবা-মা চলে যান ব্রিটেনে। শৈশব কাটে চেশায়ারের একটি গ্রামাঞ্চলে। কেমব্রিজের ফিট্জউইলিয়াম কলেজে ন্যাচারাল সায়েন্সে ট্রাইপস ও মাস্টার্সের পর সেখানেই শঙ্কর পিএইচ ডি করেন বিশিষ্ট অধ্যাপক বিজ্ঞানী ক্রিস অ্যাবেলের তত্ত্বাবধানে।
গবেষণা শেষ করে ১৯৯১ সালের শেষদিকে ন্যাটোভূক্ত দেশের রিসার্চ ফেলো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। ফের গবেষণা করেন পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর ব্রিটেনে ফিরে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ধাপে ধাপে হন অধ্যাপক। এরপর তিনি সম্মানজনক রয়্যাল সোসাইটির সদস্য হন।
২০০৮ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিনাল রসায়ন বিভাগের অত্যন্ত সম্মাননীয় হার্শেল স্মিথ চেয়ার অধ্যাপক হন। ২০১৭ ‘নাইটহুড’ খেতাবের পর ২০১৮ সালে পান রয়্যাল মেডেল। এখন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের গবেষণাগারগুলোর প্রধান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যানসার গবেষণা বিভাগেরও প্রধান।