মুক্তমত:
শিক্ষক, গুরুজন ও জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম। দেশভাগ, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল স্বাধীকার আদায়ের আন্দোলনে তিনি বাঙালির সাথী ছিলেন এবং জাতিকে পথ দেখিয়েছেন বাতিঘরের মতো। ৩০ নভেম্বর ২০২১ তারিখে তিনি আমাদের ছেড়ে অনন্তলোকের পথে যাত্রা শুরু করেছেন। দীর্ঘ জীবনব্যাপী কর্ম ও কীর্তির জন্য তাঁকে স্মরণ ও শ্রদ্ধাঞ্জলি।
সারাজীবন তিনি একনিষ্ঠভাবে শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতির সাথে ছিলেন। ভাষাতত্ত্ব, ব্যাকরণ রচনা, অধ্যাপনা, ইতিহাসবীক্ষা ও গবেষণাকর্মের পাশাপাশি সার্বিকভাবে কাজী নজরুল ইসলামকে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে তিনি যে ভূমিকা পালন করেছেন তা অতুলনীয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক এবং নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক ছিলেন। ৮৭ বছর বয়সী এই ভাষাবিজ্ঞানী, লেখক ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। সেই সময়ের দুর্লভ আলোকচিত্রও ধারণ করেন তিনি। বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের এই প্রত্যক্ষ সাক্ষী সেইসব ইতিহাস গ্রন্থিত করেছেন তার লেখায়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে প্রথম গ্রন্থ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাসের প্রথম গ্রন্থটিসহ প্রায় ৩০টি বই তিনি লিখেছেন । শিল্প-সাহিত্য বিষয়ক গবেষণায়, বাংলা চর্চা এবং নজরুল সম্পাদনায় তাঁর যে ভূমিকা ও কর্ম-কীর্তি রয়েছে তার জন্য তিনি আমাদের স্মরণে শ্রদ্ধায় উজ্জ্বল- অমলিন থাকবেন।
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের সাবেক উপাচার্য রফিকুল ইসলাম এক সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালে সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক ঘোষণা করা হয়।
স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, গবেষক ও লেখক ড. রফিকুল ইসলাম বেশ কয়েকটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বপালন করেছেন। ২০২১ সালের ১৮ মে সরকার তাকে তিন বছরের জন্য বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব দেয়। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতিও রফিকুল ইসলাম। এই বছর মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদান রাখায় তাকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’ প্রদান করা হয়।
বিএসডি/ এলএল