ক্রীড়া ডেস্ক,
অলিম্পিকে সেরা সাফল্য ভারত পেল এবারই। কীভাবে—সেটিই জানিয়েছেন ভারতের দৈনিক এই সময়–এর ক্রীড়া সম্পাদক।
দ্য শেষ হওয়া টোকিও অলিম্পিকে ভারতের পারফরম্যান্সের গ্রাফ ছিল উঁচুর দিকে। এর আগে কোনো অলিম্পিকেই ভারত সাতটি পদক পায়নি। কীভাবে সম্ভব হলো? একটু খতিয়ে দেখা যাক।
সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছে অ্যাথলেটিকসের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে। জ্যাভেলিনে প্রত্যাশা ছিল নীরজ চোপড়াকে নিয়ে। কিন্তু তিনি যে ইউরোপ ও আমেরিকার বিশ্বসেরাদের সঙ্গে লড়ে সোনা এনে দেবেন, ভাবেনি দেশ। এর আগে সোনা তো দূরের কথা, কোনো দিন অ্যাথলেটিকসে ব্রোঞ্জও পায়নি ভারত। এর আগে ২০০৮ সালে বেইজিং অলিম্পিকে শুটিংয়ে সোনা এনেছিলেন অভিনব বিন্দ্রা, কিন্তু তারপরের দুটি গেমসে, লন্ডন ও রিওতে কোনো ব্যক্তিগত ইভেন্টে সোনা আসেনি।
তবে আশার কথা এই যে গত বছর দশেক ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার অলিম্পিকে যে খেলাগুলো হয়, তার দিকে নজর দিয়েছে। ক্রিকেট নিয়ে নাচানাচি যেকোনো দেশের খেলার মানদণ্ড নির্ধারণে শেষ কথা হতে পারে না, বিশ্বের দরবারে কল্কে পেতে হলে যে অলিম্পিকে ভালো ফল প্রয়োজনীয়, সেটা বুঝতে অনেক সময় লেগেছে আমাদের। তবে ইংরেজিতে একটা কথা আছে, ‘বেটার লেট দ্যান নেভার।’
একটা জিনিস এখানে মনে রাখতে হবে। যেসব ভারতীয় পদক পেয়েছেন, তাঁদের সবাইকেই কিন্তু সাহায্য করেছে ‘TOPS’ বা টপস প্রকল্প, যার পুরো কথাটি হলো ‘টার্গেট অলিম্পিক পোডিয়াম স্কিম’।
২০১৪ সাল থেকে ভারত সরকার শুরু করেছিল এই প্রকল্প, যাঁর সাহায্য এখন প্রতিশ্রুতিমান অ্যাথলেটরা পেয়ে থাকেন। সরকারের যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তর এটির দেখাশোনা করে, যার উদ্দেশ্য হলো, প্রস্তুতিতে যাতে কোথাও কোনো গলদ না থাকে। এলিট অ্যাথলেট আইডেন্টিফিকেশন কমিটি অ্যাথলেটদের চিহ্নিত করে, যাঁদের পদক পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তারপর তাঁদের প্রতি মাসে ভারতীয় টাকায় দেওয়া হয় ৫০ হাজার টাকা। সঙ্গে বিদেশে প্রশিক্ষণের পুরো খরচ। করোনার সময় টোকিওগামী অ্যাথলেটদের নিয়মিত বিদেশেও পাঠানো হয়েছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। এই মুহূর্তে ভারতে শতাধিক অ্যাথলেট এর আওতাভুক্ত, এ ছাড়া ২৫০ জনের বেশি জুনিয়র অ্যাথলেটকে এর আওতায় আনা হয়েছে ২০২৪-এ প্যারিস ও ২০২৮-এ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের কথা ভেবে।
খুব সংক্ষেপে, ক্রিকেটের বাইরে অলিম্পিকের খেলাগুলোকে যে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি, সেই বোধ এসেছে। দেরিতে হলেও এই বোধোদয় খুব জরুরি ছিল। উপমহাদেশের মধ্যে যে দেশ যত তাড়াতাড়ি ব্যাপারটা উপলব্ধি করবে, তত এগোবে সেই দেশের খেলাধুলা।
বিএসডি/আইপি