রাশিয়ার তৈরি করোনার ‘স্পুতনিক-ভি’ টিকার প্রথম চালান এ মাসেই ভারতে যাবে। রাশিয়ায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বালা ভেঙ্কাটেশ ভার্মা গতকাল বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছেন। বার্তা সংস্থা এএনআই এক প্রতিবেদনে এ কথা জানায়।
বালা ভেঙ্কাটেশ ভার্মা সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা রুশ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে শুনেছেন, এ মাসের শেষের দিকে ‘স্পুতনিক-ভি’ টিকার প্রথম চালান ভারতে যাবে। আর ভারতে ‘স্পুতনিক-ভি’ টিকার উৎপাদন শুরু হবে মে মাসে।
‘স্পুতনিক-ভি’ টিকা নিয়ে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের এই মন্তব্য রাশিয়ার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, ভারতে ‘স্পুতনিক-ভি’ টিকার উৎপাদনের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়বে। উৎপাদনের পরিমাণ মাসে ৫ কোটি ডোজ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত রাশিয়ার উপ-রাষ্ট্রদূত রোমান বাবুশকিন গত বুধবার বলেন, ‘স্পুতনিক-ভি’ টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের বিষয়টি ভারতের সঙ্গে তাঁর দেশের বিশেষ অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা উন্মুক্ত করবে।
রোমান বাবুশকিন বলেন, ‘স্পুতনিক-ভি’ টিকার অনুমোদনের বিষয়টি নিয়ে একধরনের উদ্বেগ আছে। এমন প্রেক্ষাপটে ভারতে এই টিকার অনুমোদনের বিষয়টি একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। রাশিয়া ও ভারতের মধ্যকার বিশেষ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা উন্মোচন করবে। তা ছাড়া এই পদক্ষেপ অবশ্যই ভারতে টিকাদানের কার্যক্রমকে সহায়তা করবে।
ভারতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দিন কয়েক আগে বিশেষজ্ঞ কমিটি ভারতে ‘স্পুতনিক-ভি’ টিকা অনুমোদনের সুপারিশ করে। এই সুপারিশের ভিত্তিতে ভারতে ‘স্পুতনিক-ভি’ টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া।
‘স্পুতনিক-ভি’ ভারতে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পাওয়া করোনার তৃতীয় টিকা। জানুয়ারিতে ভারতে ‘কোভিশিল্ড’ ও ‘কোভ্যাক্সিন’ নামের দুটি টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়। দেশটিতে এখন এই দুটি টিকার প্রয়োগ চলছে।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত ‘কোভিশিল্ড’ ভারতে উৎপাদন করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট। ‘কোভ্যাক্সিন’ স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেক উদ্ভাবিত টিকা।
ভারতে ‘স্পুতনিক-ভি’ টিকা উৎপাদন ও বাজারজাত করবে ‘ডক্টর রেড্ডিজ’। বর্তমানে এই টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চলছে।
গত বছরের আগস্টে রাশিয়া ‘স্পুতনিক-ভি’ টিকার অনুমোদন দেয়। এটি বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্রীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত করোনার টিকা। রাশিয়ার দাবি, এই টিকা ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর।
বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশ রাশিয়ার ‘স্পুতনিক-ভি’ টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।