নিজস্ব প্রতিবেদক
ঝালকাঠির সদর উপজেলার একটি মাদ্রাসায় দুষ্টামি করায় আট শিশু শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করেছেন এক শিক্ষক। সদর উপজেলার পোনাবালিয়া গ্রামের কে এ খান হাফেজী মাদ্রাসায় শনিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
বিক্ষুব্ধ অবিভাবক ও এলাকাবাসী রাতে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।
গুরুতর আহত চার শিক্ষার্থী পোনাবালিয়া গ্রামের শামীম খলিফার ছেলে আমিনুল ইসলাম (১০), বাড়ইকরণ গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে মোহাম্মদ সিয়াম (৯), পোনাবালিয়া গ্রামের সুমন হোসেনের ছেলে মো. আমিনুল (৯) এবং একই গ্রামের মো. ইয়াছিনকে (১৪) উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লি চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে শিশু সিয়ামকে ঝালকাঠী সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। আহত অন্য শিক্ষার্থীরা বাড়িতে চলে গেছে।
এ ঘটনায় রোববার (৮ আগস্ট) সকালে নির্যাতনের শিকার শিশু শিক্ষার্থী মো. আমিরুল ইসলামের বাবা শামীম খলিফা বাদী হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে আসামি করে ঝালকাঠী থানায় শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, করোনাকালীন সময়ে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কে এ খান হাফেজী মাদ্রাসা চালু রেখে পড়াশোনা চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ। শনিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে তিনি মাদ্রাসায় ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করছিল। তাদের কথার শব্দে ওই শিক্ষকের ঘুম ভেঙে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ কক্ষের দরজা আটকে আট শিক্ষার্থীকে বেদম প্রহার করেন। শিক্ষার্থীরা কান্নাকাটি করতে থাকলে তাদের কক্ষের মধ্যে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেন। মারধরের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য সকল শিক্ষার্থীকে ভয়ভীতি দেখান তিনি।
মাগরিবের নামাজের সময় পেছন থেকে কৌশলে নলছিটি উপজেলার বারইকরণ গ্রামের প্রবাসী আব্দুর রহিমের ছেলে মো. সিয়াম (৯) পালিয়ে কাঁদতে কাঁদতে পোনাবালিয়া বাজারে গেলে এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পারে।
বাজারের শতাধিক ব্যক্তি মাদ্রাাসা ঘেরাও করে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে আটক করে। এ সময় আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে রাতেই ঝালকাঠী সদর থানা পুলিশ ওই মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে আটক করে নিয়ে আসে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ঝালকাঠী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান জানান, শিশু শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগে শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি।
বিএসডি/এমএম