স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,
গাইবান্ধায় জেলা হাসপাতাল কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার চেয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে এলাকাবাসীর আয়োজনে জেলা শহরের ডিবি রোডে আসাদুজ্জামান মার্কেটের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহম্মেদ রনজু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ আকন্দ, জেলা জাসদ নেতা নূর মোহাম্মদ বাবু, জাহেদা বেগমের পুত্রবধূ রিনা আক্তার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গত ১৮ জুন দুপুরে সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের পশ্চিম বাটিকামারী গ্রামের আলতাফ হোসেনের অসুস্থ স্ত্রী জাহেদা বেগমকে জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সে সময় হাসপাতালের ল্যাব বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। রক্ত পরীক্ষা করার পর বিকেলে রিপোর্টসহ রোগীকে আবার হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত জাহেদা বেগমকে কোনো ধরনের চিকিৎসাসেবা দেয়নি হাসপাতালর কর্তৃপক্ষ। শেষে বিনা চিকিৎসা ও ডাক্তারের অবহেলার কারণে মারা যান জাহেদা বেগম। পরে রোগীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম জাহিদসহ তাদের স্বজনরা বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ তোলায় তাদের উপর হামলা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় রোগীর স্বজন বোয়ালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদের নাম উল্লেখসহ ৮-৯ জনের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা সদর থানায় ‘হাসপাতালে ভাঙচুর ও চিকিৎসককে মারধরে’র অভিযোগে মামলা করে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) হারুন অর রশিদ। কিন্তু রোগীর স্বজনদের পক্ষ থেকে সদর থানায় এজাহার দেওয়া হলেও মামলা নেয়নি পুলিশ।
বক্তারা বলেন, অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর বিচারের দাবিতে মামলা গ্রহন ও এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করেন তারা।
মানববন্ধনে জাহেদা বেগমের পুত্রবধূ রিনা আক্তার বলেন, ‘আমার শাশুড়ি অসুস্থ ছিল। তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেছি। তারপর ডাক্তার ব্লাড টেস্ট করতে দিছে। ব্লাড টেস্ট করে নিয়ে আসার পর ডাক্তার সুজন পাল বলেন, আপনার শাশুড়ি সুস্থ আছে, ভাল আছে। আপনারা তাকে বাসায় নিয়ে যান। কিন্তু শাশুড়ির অবস্থা খারাপ দেখে আমরা সুজন পালের হাত ধরছি, পাও ধরছি তবুও সে ভর্তি নেয় নাই। তারপর আমার শাশুড়ি বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালে মারা গেলে তারা নিজের দোষ ঢাকার জন্য হাসপাতালে ভাঙচুর করে। পরে আমাদেরকে বের করে দিছে।’
রিনা আক্তার আরও বলেন, ‘এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উল্টো আমার স্বামীর নামে হাসপাতালে ভাঙচুরের মামলা দিছে। সেখানে বলা হয়েছে, আমরা নাকি মৃত রোগী হাসপাতালে নিয়ে গেছি। তাহলে আমার প্রশ্ন, ওনারা কাকে দুইমাসের ঔষধ লিখে দিল? কাকে রিপোর্ট করতে দিল? আমরা মৃত্যুর এই ঘটনার পর সদর থানায় মামলা করতে গেছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের মামলা নেয়নি। আমার স্বামীর নামে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করছি।’
বিএসডি/আইপি