জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে পুলিশের আইজিপিসহ সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ দাবি করেন তিনি।
মহান মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বিরোধিতা করেছিল, বিজয়ের এ মাসে সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা কি নতুন করে কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ষড়যন্ত্রের বিষয় তো অবশ্যই আছে। আমি বলেছি, আমাদের এই বিজয়ের মাসে যুক্তরাষ্ট্রের যে বক্তব্য, সেটা আমাদের দেশের জঙ্গিবাদ ও তাদের পৃষ্ঠপোষক এবং সন্ত্রাসীদের উৎসাহী করবে। মূল কথা হচ্ছে এটা।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, র্যাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে বক্তব্য দিয়েছে তা নিয়ে গতকাল (রোববার) দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। এ নিয়ে আমরা ঘাঁটাঘাঁটি করতে চাই না। বিষয়টি নিয়ে দেশটির সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের কোনো প্রভাব ফেলবে না। আমাদের নির্বাচনে তার প্রভাব পড়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের নির্বাচন আমরাই করব, এখানে কি আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবে নির্বাচন করব?
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার পরিচালনা জন্য একটি সমন্বয় কমিটি করার কথা জানান ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবকে আমি পাল্টা প্রশ্ন করতে চাই। মুরাদ যা বলেছে, তার চেয়েও ঘৃণ্য ও জঘন্য কথা বলার পরে আলালকে তিনি সমর্থন করেছেন। এটা হলো আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের পার্থক্য। এত অশ্রাব্য ও অশোভন বক্তব্য কি করে মির্জা ফখরুল সমর্থন করেন। আমরাতো মুরাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু তারা আলালকে বহিষ্কারতো দূরের কথা নৈতিক সমর্থন দিয়েছেন।
মুজিববর্ষে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাদের সংবর্ধনা কর্মসূচির বাস্তবায়ন সম্পর্কে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুজিববর্ষ শেষ হয়ে যায়নি। আগামী মার্চ পর্যন্ত চলবে। এর মধ্যে আমাদের অনেক কাজ হয়ে গেছে। লেখা সংগ্রহ করা, জেলা পর্যায় থেকে প্রবীণ তালিকা নেওয়া হয়ে গেছে। এখন আমাদের সুবিধামতো সময়ে মার্চের মধ্যে আয়োজন করব।
১৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর পরিচালনায় যে শপথ অনুষ্ঠান হবে তাতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, শুধু ঢাকায় নয়, একইসঙ্গে সারাদেশে এই চেতনা ছড়িয়ে দিতে চাই। শুধু আমাদের নেতাকর্মীরা নয়, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের, অসাম্প্রদায়িক চেতনার সব শ্রেণি-পেশার জনগণকেও আমরা এতে অংশগ্রহণে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠান, এটি জাতির অনুষ্ঠান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ বিষয়ে বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা সমন্বয় করবেন। ১৮ ডিসেম্বর আমরা একটি বিজয় শোভাযাত্রার আয়োজন করেছি। এ শোভাযাত্রা কীভাবে সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল করা যায় সেই ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। শিখা চিরন্তন থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত এই শোভাযাত্রাটি হবে।
১১ ও ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে বলে জানান তিনি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, ওয়াসিকা আয়শা খান, ফরিদুন্নাহার লাইলী, অসীম কুমার উকিল, দেলোয়ার হোসেন, বিপ্লব বড়ুয়া, আবদুস সবুর, সুজিত রায় নন্দী, আমিনুল ইসলাম, সায়েম খান প্রমুখ।
বিএসডি/এসএফ