নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকার যে হারে ভাড়া বাড়িয়েছে মালিকরা এখন তার কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। অন্যায় ও অন্যায্যভাবে বাড়ানো বাস ও লঞ্চের ভাড়া বাতিলের দাবি জানান তিনি।
শুক্রবার (১২ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন। যাত্রী স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে মালিক শ্রমিক ও সরকার মিলেমিশে একচেটিয়াভাবে গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এ সভার আয়োজন করা হয়।
এসময় বাস ও লঞ্চের মালিকদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অবৈধ সুবিধা দিতে সরকার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন মালিকরা দেশবাসীকে ধর্মঘটের নামে জিম্মি করে ভাড়া বৃদ্ধির নাটক মঞ্চস্থ করে। পরে সরকারের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ভুয়া অযৌক্তিক একটি ব্যয় বিশ্লেষণ নাটক দেখিয়ে একচেটিয়াভাবে মালিকদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়।
অনুষ্ঠানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরের আলাদা আলাদা ভাড়া নির্ধারণ, পুরোনো গাড়ি ও নতুন গাড়ির আলাদা আলাদা ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি ভাড়া নির্ধারণের নানা অযৌক্তিক দিক তুলে ধরার পাশাপাশি দূরত্ব জালিয়াতি ও ভাড়ার তালিকা জালিয়াতিসহ ভাড়া নির্ধারণের নানা অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব। এসব অনিয়ম বন্ধ করে মালিক শ্রমিকদের সংখ্যানুপাতে যাত্রী সাধারণের প্রতিনিধি নিয়ে গণপরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ কমিটি পুনঃগঠনের দাবি জানান তিনি।
এসময় বলা হয় ২০১৬ সালে তেলের মূল্য প্রতি লিটারে ৩ টাকা কমানো হলে বাসের ভাড়া কমানো হয় প্রতি কিলোমিটারে ৩ পয়সা। আর বাসের ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাড়ানো হয়েছে ২৭ পয়সা। তারা প্রতি লিটারে ১৫ টাকা তেলের মূল্য বৃদ্ধি অনুপাতে প্রতি কিলোমিটারে ১৫ পয়সা বাস ও লঞ্চ ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে সারা দেশে গণপরিবহনগুলোতে চলমান ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।
সংগঠনের চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি সৈয়দ মোকতার উদ্দীনের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন ন্যাপ সাংগঠনিক সম্পাদক মিটুল দাশগুপ্ত, মহানগর জাতীয় পার্টি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম সাইফুল্লাহ সাইফু, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক মো. জাফর ইকবাল, এসডিজি ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহার, পরিবেশবিদ নেছার আহমদ খান, যাত্রী কল্যাণ সমিতির চট্টগ্রাম মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওসমান জাহাঙ্গীর প্রমুখ।