মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী একটি বিক্ষোভে গাড়ি তুলে দিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। প্রত্যক্ষদর্শী এ তথ্য জানান ।
আজ রোববার সকালে মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ১৫ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।
ঘটনাস্থলে থাকা দুজন প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, ইয়াঙ্গুনে আজ সকালে একটি ‘ফ্ল্যাশ মব’ বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ শুরুর কয়েক মিনিটের মাথায় তার ওপর গাড়ি তুলে দেয় নিরাপত্তা বাহিনী। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, বিক্ষোভে গাড়ি তুলে দিয়েই ক্ষান্ত থাকেনি নিরাপত্তা বাহিনী। তারা বেশ কিছু বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারও করে।
নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ না করে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমি ধাক্কা খেয়ে একটি ট্রাকের সামনে পড়ে যাই। একজন সেনাসদস্য তাঁর রাইফেল দিয়ে আমাকে পেটাতে শুরু করেন। আমি নিজেকে রক্ষা করি। সেনাসদস্যকে পেছনের দিকে ধাক্কা দিই। তারপর তিনি আমাকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। আমি আঁকাবাঁকাভাবে দৌড়ে পালিয়ে যাই। ভাগ্যক্রমে, আমি পালাতে সক্ষম হয়েছি।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফ্ল্যাশ মব বিক্ষোভের পেছনের দিক দিয়ে একটি বেসামরিক গাড়ি তুলে দেওয়া হয়। গাড়িটি বেসামরিক হলেও তাতে সেনাসদস্যরা ছিলেন। গাড়ি তুলে দেওয়ার পর বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। তখন বিক্ষোভকারীদের মারধর ও গ্রেপ্তার শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী। কিছু বিক্ষোভকারী মাথায় গুরুতরভাবে আঘাত পেয়েছেন, অজ্ঞান হয়ে গেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট হওয়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের ওপর একটি গাড়ি উঠে গেছে। সড়কে লোকজন পড়ে আছেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে জান্তা সরকারের এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে রয়টার্স। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থান হয়। সেনাবাহিনী দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। তারা সু চিসহ দেশটির অনেক রাজনীতিককে বন্দী করে।
সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে বিক্ষোভ করে আসছেন গণতন্ত্রপন্থী সাধারণ জনতা। এ বিক্ষোভ দমনে জান্তা সরকার সহিংস পন্থা অবলম্বন করছে। মিয়ানমারে সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভে ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। গ্রেপ্তার হাজারো মানুষ।
সূত্র:রয়টার্স
বিএসডি/এলএল