ক্রীড়া ডেস্ক:
শুধু টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বলেই নয়, বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের আগে ঘরের ম্যাচে টানা ১৭ টেস্ট হারেনি নিউজিল্যান্ড। শেষ ১০ বছরে উপমহাদেশীয় কোন দলই হারাতে পারেনি কিউইদের। আর বাংলাদেশ? ৯ টেস্ট তো বটেই, তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৩২ ম্যাচ খেলে হার সবগুলোতেই। সেই টাইগাররাই কিনা বাজিমাত করল। পরিসংখ্যাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ২ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট জিতেছে ৮ উইকেটে।
এই ম্যাচ যে জেতা সম্ভব সেটি শুরুতে বিশ্বাস হয়নি খোদ বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মুমিনুল হকের। মুশফিলের রহিমের শটে শেষ রান নেওয়ার পরেই মুমিনুলের মনে হয়েছে জিতে গেছে তার দল। তার আগে শেষ চারদিন ছন্দ ধরে রাখলেও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন না অধিনায়ক। চতুর্থ দিন এবাদত হোসেনের আগুনে বোলিংয়ের পর সফরকারীদের মনে হয়েছে ম্যাচ হাত থেকে বের হয়ে যায়নি।
ম্যাচ জয়ের পর মুমিনুল বলছিলেন, ‘আমরা ফল নিয়ে কিন্তু চিন্তা করিনি। আমি এখন বললে হয়তো অনেকে বলবে লোকটা পাগল হয়ে গিয়েছে। আমাদের ভেতরে ছিল, প্রস্তুতিটা ভালো নেই। প্রক্রিয়া অনুযায়ী খেলি। যেমন ব্যাটিংয়ের সময় লক্ষ্য ছিল লম্বা সময় ধরে করার। বলিংয়ে একটা জায়গায় প্রসেসে করব। শেষ কাল যখন এবাদত হঠাৎ করেই নিল, তখন আমাদের মনে হইল, এ টেস্ট জেতার জন্য যাচ্ছি।’
যোগ করেন মুমিনুল, ‘আজ অলআউট হওয়ার পর ক্লিয়ার হয়েছি। তবে বাড়তি উত্তেজনা কাজ করছিল না। টিভিতে দেখতে থাকলে দেখবেন, আমরা কাম অ্যান্ড কুলই থাকার চেষ্টা করেছি। বল ধরে ধরে খেলার চেষ্টা করেছি ব্যাটিং-বোলিং। ব্যাটিংয়ে শুরুতে প্রেশারে ছিলাম। মুশফিক ভাই ওই ডাবলস নেওয়ার পরই মনে হয়েছে জিতেছি।’
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে কিউইদের ৩২৮ রানে আটকে দেয় বাংলাদেশ। পরে নিজেরা স্কোর বোর্ডে তোলে ৪৫৮ রান। এতে ১৩০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ব্ল্যাকক্যাপসরা। তবে টাইগার বোলারদের বোলিং তোপে সুবিধা করতে পারেনি স্বাগতিক শিবির। এবার অলআউট হয় ১৬৯ রানে। এতে ৪০ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় বাংলাদেশের সামনে। ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনে সে লক্ষ্যে ৮ উইকেট হাতে রেখেই পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
জয়ের পর ভাষা হারিয়েছেন মুমিনুল, ‘আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না কি অনুভব করছি। এটা এক কথায় অবিশ্বাস্য। সত্যি কথা বলতে, আমি গতকাল রাতে ঘুমোতে পারিনি আজ কি হবে সেটা ভেবে। এই টেস্টটা জেতা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমাদের ঐতিহ্যের জন্য এই টেস্টটা জেতা দরকার ছিল।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে দেশের ক্রিকেটে পরিবর্তনের আশা মুমিনুলের, ‘আমি তো অনুভূতিটা ঠিক মতো প্রকাশ করতে পারছি না। আমার কাছে মনে হয় এটা আমাদের টেস্ট ক্রিকেট উন্নতির একটা লক্ষণ হতে পারে। পাকিস্তান সিরিজের পর সবার মধ্যেই টেস্ট ক্রিকেট উন্নতি করার একটা তাড়না ছিল। সব বিভাগেই সেটা দেখা গেছে। সবাই সবাইকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছে। কোচিং স্টাফও সবাই সাপোর্টিভ ছিল।
বিএসডি /আইপি