নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে আবারো করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। একদিনের ব্যবধানে যশোরে করোনা সংক্রমন বেড়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণ। গত ২৪ ঘণ্টায় (১২ জানুয়ারি) ৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৮ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার শনাক্তের হার দাড়িয়েছে ৩৩.৭৪ শতাংশে। যা আগের দিন (১১ জানুয়ারি) ছিল ১৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
আক্রান্তের পরিসংখ্যান অনুযায়ী যশোর জেলাকে মধ্যমাত্রার ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এদিকে, দেশে প্রথমবারের মতো ঢাকার বাইরে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের রোগী শনাক্ত হয়েছে যশোরে। যবিপ্রবি জিনোম সেন্টারের শনাক্ত হওয়া তিনজনের মধ্যে একজন বাংলাদেশি এবং দু’জন ভারতীয়।
এমন পরিস্থিতিতেও যশোরে করোনা নিয়ে সচেতনার ব্যাপক অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অধিকাংশ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করেছেন না। স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। ফলে দিনে দিনে আরো ভয়াবহ অবস্থা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন যবিপ্রবি গবেষক দলের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ।
যবিপ্রবির জিনোম সেন্টার থেকে জানানো হয়, ভারতীয় দুই নাগরিকের মধ্যে একজন পুরুষ, যার বয়স ৩০ বছর এবং নারীর বয়স ৪১ বছর। তাদের মধ্যে করোনার তেমন কোনো উপসর্গ নেই। বাংলদেশি নাগরিক একজন পুরুষ এবং তার বয়স ২৫ বছর। যিনি স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন বলে গবেষক দলটি ধারণা করছে। তার তিন দিন ধরে ঠান্ডা, গলা ব্যথা ছাড়া অন্য কোনো উপসর্গ নেই। তবে করোনা ভাইরাসের নতুন এ ধরনটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এটি করোনার ডেল্টা ধরনের চেয়ে প্রায় চারগুণ শক্তিশালী।
গবেষক দলটি জানিয়েছে, ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসের নতুন এ ধরনের স্পাইক প্রোটিনে ৩০টিরও বেশি মিউটেশন বিদ্যামান। ওমিক্রন শনাক্ত হওয়া তিনজনের ডাটাটি জিএসআইডি ডাটাবেজে জমাও দেওয়া হয়েছে।
যবিপ্রবির জিনোম সেন্টার গবেষক দলের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, নতুন করে ওমিক্রন শনাক্ত ওই তিনজনের মধ্যে ৪১ বছর বয়সী এক নারী এবং ৩০ ও ২৫ বছর বয়সী দুজন পুরুষ। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করোনাভাইরাস আক্রান্ত ওই তিনজনের নমুনা সংগ্রহের পর জেনোম সিকোয়েন্স করেছে।
ওমিক্রন শনাক্ত তিনজনের মধ্যে দুজন ভারতীয়, তারা বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছিলেন। একজন বাংলাদেশি। ভারতীয়রা ফিরে যাওয়ার সময় নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড ধরা পড়ে। পরে জেনোম সিকোয়েন্স করে ওমিক্রন শনাক্ত হয়। আর বাংলাদেশি ওই নাগরিকের বিদেশ ভ্রমণের কোনো ইতিহাস নেই। বিদেশ ফেরত কারো সংস্পর্শে আসার কথাও জানা যায়নি। আমরা ধরে নিচ্ছি ওমিক্রন ধরনের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়েছে।
করোনার নতুন এ ধরনটি শনাক্তের বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ওমিক্রন খুবই দ্রুত সংক্রমনশীল। এজন্য টিকা গ্রহণ, মাস্ক ব্যবহারসহ কঠোরভাবে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
তিনি জানান, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্তের কাজটি জিনোম সেন্টারে অব্যাহত থাকবে।
বিএসডি/এসএ