অনলাইন ডেস্ক:
নাম তার হিরা জিশান। থাকেন পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোরে। তিনি প্রতি শুক্রবারই বিয়ের কনে সাজেন। গত ১৬ বছর ধরে এটা করে আসছেন তিনি।
নারী বয়স এখন ৪২ বছর। গত ১৬ বছর ধরে প্রতি শুক্রবার হিরা ১৬ রকম অলঙ্কারে সাজসজ্জা সারেন। হয়ে ওঠেন বিয়ের কনে। এদিন তিনি বিয়ের পোশাক পরেন, হাতে-পায়ে মেহেদি পরেন। সারাদিনই তিনি ওয়েডিং কাপলের মতো থাকেন। কেন, এমন অদ্ভূত ব্যাপার ঘটাচ্ছেন ওই নারী?
এ বিষয়ে হিরা যা জানান তাতে হাস্যরসের চেয়ে করুণরসের আধিক্যই বেশি। হিরার মা তখন অসুস্থ। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। মায়ের শরীরের অবস্থার দিন দিন অবনতি হচ্ছিল। তখন হিরার মা হিরাকে বললেন তিনি চান মৃত্যুর আগে তিনি হিরার বিয়ে দিতে! হিরার মাকে সেই সময়ে এক ব্যক্তি রক্ত দিয়েছিলেন। সেই রক্তদাতার সঙ্গেই হিরার বিয়ে স্থির হল। মায়ের শান্তির জন্য সুখের জন্য হিরা তাকে বিয়ে করতে সম্মত হয়েছিলেন।
হিরা বলেন, বিয়ে হল হাসপাতালে। বিয়ের পরে তিনি রিকশা করে শ্বশুরবাড়ি যান। বিয়ের দিন তিনি মোটেই প্রস্তুত ছিলেন না। কোনও সাজগোজও করতে পারেননি। মনের অবস্থাও তো ভালো ছিল না।
তিনি আরও জানান, বিয়ের ক’দিন পরেই হাসপাতালেই তার মা মারা গেলেন। তিনি খুবই বিষণ্ণ হয়ে পড়লেন। কেননা, মায়ের স্মৃতি তাকে কুরে কুরে খাচ্ছিল। বিয়ের পরে হিরার সন্তানও মারা যায়। হিরা আরও বিমর্ষ হয়ে পড়েন। ডিপ্রেশন গ্রাস করে তাকে। এই বিষাদ থেকে বেরিয়ে আসতেই তিনি প্রতি শুক্রবার কনের সাজে সাজবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।
হিরা জানান, যার সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল, তিনি এখন লন্ডনে থাকেন। হিরা অবশ্য সন্তানদের নিয়ে পাকিস্তানেই থাকেন। তবে তার স্বামী বিদেশে থাকলেও তিনি শুক্রবার করে কনে সাজা থেকে বিরত হন না। কেননা, এটা করে তিনি খুশি থাকেন। তার নিঃসঙ্গতা কাটে। সূত্র: আনন্দবাজার
বিএসডি /আইপি