অভিযোগ গুরুতর। নেইমারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ আসবে জানাই ছিল। পিএসজি তারকাকে ঘিরে নাইকি সম্প্রতি এক বিতর্কিত ঘটনা জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মীকে নেইমার নাকি যৌন হয়রানি করেছিলেন। সেই ঘটনার তদন্তে নেইমার সহায়তা না করায় তাঁর স্পনসর চুক্তি বাতিল করা হয়েছিল—জানিয়েছে নাইকি।
নেইমারের পক্ষ থেকে সেটির জবাব এল সঙ্গে সঙ্গেই। স্পনসর চুক্তি বাতিলে পেছনের যে ঘটনার কথা নাইকি জানিয়েছে, সেটিকে ‘ভিত্তিহীন ও মিথ্যা’ বলছেন নেইমার।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত বৃহস্পতিবার নেইমারকে নিয়ে বিতর্কিত ঘটনাটা প্রকাশ করে। ২০১৬ সালে নিউইয়র্কে নাইকির এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন নেইমার।
তখন হোটেলে নিজের কামরায় জোর করে সেই কর্মীকে যৌন হয়রানি করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। নিজের বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীদের ঘটনাটা বলেন সেই নারী কর্মী। ২০১৮ সালে এ নিয়ে অভিযোগ করেন তিনি।
পরের বছর বাইরের একটি আইনি প্রতিষ্ঠানকে এ অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেয় নাইকি। তদন্ত চলাকালে নাইকির বিপণন ও প্রচারে নেইমারকে আর দেখা যায়নি। শেষ পর্যন্ত গত বছর আনুষ্ঠানিকভাবে ১৫ বছরের সম্পর্কে ছেদ টানে দুই পক্ষ।
কোপা আমেরিকা সামনে রেখে নেইমার এখন ব্রাজিলে। রিও ডি জেনিরোয় জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন করছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানালেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছেন, ‘আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এই ব্যক্তির সঙ্গে এমন কোনো সম্পর্ক আমার কখনোই ছিল না, তাকে এমন কোনো প্রস্তাবও দেওয়া হয় না। তার সঙ্গে তো আমার কথাই হয়নি! তার সমস্যা কী, তা জানতে কথাও বলার সুযোগ পাইনি। সেই কর্মী সুরক্ষিত ছিল না, একজন স্পনসরড অ্যাথলেট হিসেবে আমিও সুরক্ষিত ছিলাম না।’
ইএসপিএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেই নারী কর্মী নাকি শুরুতে ঘটনাটা গোপন রাখতে চেয়েছিলেন। নাইকি ২০১৯ সালে নেইমারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছিল সেই কর্মী আইনি পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছা প্রকাশের পর।
নাইকির জেনারেল কাউন্সেল হিলারি ক্রেন এ নিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেছেন, ‘বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হওয়া তদন্ত কার্যক্রমে সাহায্য করতে নেইমার অস্বীকৃতি জানানোয় নাইকি তাঁর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করে।’
গত বছর নেইমারের সঙ্গে নাইকি চুক্তি বাতিলের সময় সেই অভিযোগ নিয়ে বিশদভাবে কিছু জানাতে পারেনি। কারণ, তদন্তপ্রক্রিয়া তখনো শেষ হয়নি এবং তখনো অকাট্য কোনো প্রমাণ মেলেনি।
নাইকির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ঘটনাটা নিয়ে আমাদের খোলামেলা কথা বলার মতো একটি প্রমাণও তখনো পাওয়া যায়নি। সমর্থনযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ করাটা নাইকির সঙ্গে মানানসই নয়।’
এদিকে নেইমার ঘটনাটা অস্বীকার করে ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘আমি বুঝতে পারি না, কাগজপত্র দ্বারা সমর্থনযোগ্য একটি ব্যবসায়িক সম্পর্ককে একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠান কীভাবে নষ্ট করতে পারে। লিখিত কথা পাল্টানোর তো কোনো সুযোগ নেই। ভাগ্যের কী পরিহাস, যারা আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, সেই ব্র্যান্ডকে বুকে (ব্রাজিল দলের স্পনসর নাইকি) রেখে চলতে হবে। এটাই জীবন! তবে আমি শান্ত এবং শক্ত আছি। এটা বিশ্বাস করি, সময়, এই নির্মম সময় একসময় সত্যটা বের করে আনবে।’