নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাসস্থান সংকট, জলবায়ুর পরিবর্তন, নগরায়নের নামে বন-জঙ্গল কেটে সাবাড় করাসহ নানা কারণে রংপুর অঞ্চল থেকে সাপের শত্রু বলে খ্যাত বেজি হারিয়ে যেতে বসেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে প্রাণিটির অস্তিত্ব এক সময় বিপন্ন হয়ে পড়বে। এদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসস্থলের ব্যবস্থা করা না হলে আগমীতে এই প্রাণিটি হারিয়েও যেতে পারে।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বেজি স্তন্যপায়ী প্রাণি। এদের সারা শরীর লোমে ঢাকা। খুব দ্রুত চলাফেরা করতে পারে। দিনের বেলা বেজিরা খাবার সংগ্রহ করে রাতে মাটিতে নিজেদের তৈরি গর্তে অবস্থান করে। বেজি ফসলের ক্ষেতের ইঁদুর, সাপ, মাছ, ব্যাঙ, পোকামাকড় এমনকি পাখির ডিমও খায়। মাঝে মধ্যে এরা হাঁস-মুরগি, কবুতরের ছানা এবং অন্যান্য ছোট প্রাণিও খায়। ক্ষেতের ইঁদুর ও পোকামাকড় খেয়ে এরা উপকার করে ফসলের এবং কৃষকের। এছাড়াও বেজি যে অঞ্চলে থাকে, সে অঞ্চলে সাপ কম থাকে। বিষধর সাপ, ব্যাঙ, পোকামাকড় এবং বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ খেয়ে বেজি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অসামান্য অবদান রাখে। এক সময় শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জে এদের দেখা যেত। এখন গ্রামে দু’চারটি বেজি দেখা গেলেও থাকা শহরে এদের দেখা পাওয়া বিরল। শহরে এই প্রাণিটির আবাস স্থল সংকট প্রকট।
বেজিকে সাপের শত্রু বলা হয়ে থাকে। দ্রুত এরা সাপকে হারিয়ে দিতে পারে। এদের দেহে এমন উপাদান রয়েছে তো সাপের বিষকে অকেজো করে দিতে পারে। বাংলাদেশে তিন প্রজাতির বেজি রয়েছে। এরমধ্যে বড় বেজি, ছোট বেজি এবং কাঁকড়াভুক বেজি।
রংপুর বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা স্মৃতি সিংহ রায় এই প্রাণিটি রক্ষায় অবাধে বন-জঙ্গল কাটা থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, গ্রামে অনেকে এখনো খেলার ছলে বেজি ধরে মেরে ফেলে এটি বন্ধ করতে হবে। কারণ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বেজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এদের রক্ষা করার দায়িত্ব সবার।